‘ভাই এভাবে লাশ হয়ে ফিরবে, মাকে এখন কেমনে বুঝাব ’

  10-12-2023 12:44PM



পিএনএস ডেস্ক: শিক্ষা সফরে কলেজের সব শিক্ষক-কর্মচারীরা রওনা দিয়েছিলেন মেহেরপুরের ঐতিহাসিক স্থান মুজিবনগরের উদ্দেশে। হাসি-আনন্দে মেতেছিলেন সবাই। কিন্তু মনোবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক (প্রদর্শক) শামীম কবির সুইটের আকর্ষিক মৃত্যুতে পুরো আয়োজন যেন রূপ নেয় বিষাদে। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর ডিগ্রি কলেজে গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, কলেজ চত্বরে রান্নাবান্না শেষে যথাসময়ে খাবার গাড়িতে তোলা হয়। ঠিক সকাল ১০টায় কলেজ চত্বর থেকে দুটি বাস রওনা হয় মুজিবনগরের উদ্দেশে। কিন্তু মাত্র এক কিলোমিটার যাওয়ার পরেই অসুস্থবোধ করেন শিক্ষক শামীম। সহকর্মীদের গাড়ি থামাতে বলেন। পরে মুলাডুলি রেলগেটে ওঠার আগেই গাড়ি থেমে যায়।

তবে ততক্ষণে সহকর্মী মণির কোলে অচেতন হয়ে পড়েন শামীম। সকলে মিলে দ্রুত গাড়ি থেকে নামিয়ে তাকে রাজাপুর বাজারের শশী ক্লিনিকে নিয়ে যান। ততক্ষণে সব শেষ। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান- শিক্ষক শামীমের হৃদক্রিয়া চিরতরে থেমে গেছে। মুহূর্তেই শিক্ষা সফরের আনন্দ যেন রূপ নেয় বিষাদে, আনন্দ ভেসে যায় সহকর্মীদের কান্না আর হাহাকারে।

তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে অধ্যক্ষ শিক্ষা সফর বাতিল করে কলেজে ফিরে আসেন। সেই সঙ্গে কলেজ অধ্যক্ষের মাইক্রোবাসে তুলে শামীমের মরদেহ নেয়া হয় তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার পাঁচবাড়িয়ায়। তিনি ওই গ্রামের মসলেম উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনার খবর পেয়ে শামীমের মরদেহ দেখতে তার বাড়িতে ভিড় জমান হাজারো মানুষ।

শামীম এক মেয়ে ও এক ছেলের জনক। মেয়ে হুমায়রা জাহান পাঁচবাড়িয়া বালিকা বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী আর ছেলে ফাহিম কবীর রাজাপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে সপ্তম শেষ করে অষ্টম শ্রেণিতে উঠবে। তার স্ত্রী গৃহিণী।

নিহত এ শিক্ষকের একমাত্র ছোট ভাই খলিশাডাঙ্গা কলেজের প্রভাষক মাসুম বলেন, বাবা-মায়ের আমরা মাত্র দুটি সন্তান ছিলাম। এখন মাকে কেমন করে বুঝাব। ভাই সকালে শিক্ষা সফরে গিয়ে এভাবে লাশ হয়ে ফিরবে বিশ্বাস হচ্ছে না।

রাজাপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ তুগলক বলেন, শিক্ষক শামীম কবির প্রতিষ্ঠালগ্নেই এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। তিনি সকলের প্রিয়জন ছিলেন। সবার সঙ্গেই ছিল সদ্ভাব। তার মৃত্যুতে আমরা একজন দক্ষ সহকর্মীকে হারালাম।


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন