রাস্তায় ফেলে কনস্টেবলকে বেধড়ক পেটালেন এএসপি

  16-04-2024 04:46AM



পিএনএস ডেস্ক: সহকারী এক পুলিশ সুপার রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটালেন তারই এক সহকর্মী পুলিশ সদস্য, তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীকে। সেখানেই ক্ষান্ত হননি ওই সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি)। পরে বেদম পেটালেন ঘুরতে আসা স্থানীয় পর্যটকদেরও।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এএসপির মারধরের সেই ভিডিও। ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের একটি সড়কে পুলিশের গাড়ির সাইরেন বাজছে। দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছেন সড়কে থাকা মানুষজন। সেখানে একটি লাঠি হাতে পর্যটকদের পেটাচ্ছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

বেধড়ক মারধরের এমন অভিযোগ উঠেছে ফেনীর সোনাগাজী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তসলিম হুসাইনের বিরুদ্ধে। তার মারধরে আহত হয়েছেন ঢাকা হাইওয়ে পুলিশের সদস্য ওমর ফারুক, আলী আজগর ও তার স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন পর্যটক। আহতরা সবাই নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের মালিপাড়া ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে নোয়াখালীর পর্যটন এলাকা মুছাপুর রেগুলেটর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেল নিয়ে মুছাপুরে ওই পুলিশ সদস্য তার পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে যান। এরপর সেখানকার সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।

এরইমধ্যে গাড়ি থেকে এএসপি তসলিম হুসাইন একটি লাঠি নিয়ে নেমে আসেন। গাড়ি থেকে নেমেই লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এতে পুলিশ সদস্যের ভাই আজগর এএসপি তসলিম হুসাইনকে এসব করতে নিষেধ করলে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে জামার কলার ধরে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন তিনি। তাকে থামাতে গেলে আজগরের স্ত্রী ও ভাই এগিয়ে আসেন । এ সময় তাদেরসহ অন্য পর্যটকদেরও লাঠি দিয়ে পেটান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

মারধরের শিকার আলী আজগর বলেন, একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তার দ্বারা সাধারণ মানুষের প্রতি এমন নির্মমতার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি দাবি করে সহকারী পুলিশ সুপার তসলিম হুসাইন বলেন, ওইদিন আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমি মুছাপুরের ঘুরতে আসি। সড়কের জ্যাম থাকায় আমি প্রথমে গাড়ি থেকে নেমে যাই যান চলাচল স্বাভাবিক করতে। কিন্তু এ সময় সড়কের উল্টো পাশে একটি মোটরসাইকেলে নিজের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আজগর। আমি এগিয়ে গিয়ে তাকে সরতে বললে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এরইমধ্যে গাড়ি থেকে আমার ভাইসহ অন্যরা নেমে আসে এবং আজগরের ভাই ফারুক আমাকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিলে আমরা কথা বলি। এ সময় তর্কবির্তকের একপর্যায়ে আজগর আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারতে শুরু করলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তাদের সঙ্গে বসে মীমাংসা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

নোয়াখালী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোর্তাহিন বিল্লাহ জানান, ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। বিষয়টি তারা নিজেদের মধ্যে সমাধান করেছেন।

ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হোসেন জানান, এ বিষয়ে কেউ তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এমন কিছু পেলে তদন্ত করে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক নোয়াখালীর মুছাপুরে ঘুরতে যান। সেখানে সড়কটি সরু হওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে, পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এমন আচরণ প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন