‘কেউ মাংস দিতে চায় না, তাড়িয়ে দেয়’

  17-06-2024 06:08PM



পিএনএস ডেস্ক: ‘আমাগো ঈদের দিনে কোনো আনন্দ নাই, আমাগো আনন্দ শুধু ঈদের দিন দুই পিস মাংস দিয়া ভাত খাওয়া। সকালে জলভাত (পান্তা) খেয়ে বের হইছি। সন্ধ্যায় মাংস দিয়ে ভাত খামু নাতি আর ভাইয়ের ছেলেরে নিয়ে। কিন্তু যারা কোরবানি দিচ্ছে তাদের বাড়ি গেলে তাড়িয়ে দেয়। একজন পায়ের মাংস দিচ্ছে দুই পিস, তাই পাইছি। কেজিখানেক মাংস হলে নাতি আর ভাইয়ের ছেলে নিয়ে কয়েকদিন খাইতে পারুম।’ ঈদুল আজহার দিন এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা দিলজান বেগম।

সোমবার (১৭ জুন) বিকেলে সাভার পৌর এলাকার সিরামিক্স মহল্লার বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে কোরবানির মাংস সংগ্রহের জন্য এসে নিজের ভাগ্যের দুর্দশার কথা বলছিলেন তিনি।

দিলজান বেগম বলেন, ‘১০ বছর আগে স্বামী মারা গেছে। এরপরে জীবিত ছিল এক ছেলে ও এক মেয়ে। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে চার বছর আগে আবার ছেলের মৃত্যু হয়। মেয়ের প্রথম বিয়ে টিকে নাই। ওই ঘরে এক ছেলে হয়েছিল। ওই ছেলেকে আমার কাছে রাইখা আবার আমার মেয়ে নিজের পছন্দে বিয়ে করছে। এখন আর মেয়ে আমার কোনো খোঁজ-খবর নেয় না।’

এ সময় প্রতিবেদকের কাছে নিজের ভাগ্যকে দোষ দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ষাটোর্ধ্ব এ বৃদ্ধা।

দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এখন নাতি ও ভাইয়ের এক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে একটি ছাপড়া ঘর ভাড়া করে থাকি। নাতি ও ভাইয়ের ছেলে ছাড়া আমার দুনিয়ায় এখন আর কেউ নাই। আমার বয়স হইছে, এখন আর কাজ করতে পারি না। একটু হাঁটলেই বসতে হয়। তারপরও আজ বের হইছি। ঈদের দিন ওদের মুখে দুইটা ভালো খাবারের জন্য মানুষের বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছি। কিন্তু কেউ দিতে চায় না, তাড়িয়ে দেয়।’


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন