সরবরাহ থাকলেও সবজির বাজার চড়া

  24-03-2017 06:04PM

পিএনএস ডেস্ক:এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে বেড়েছে সব ধরনের মাছ, মাংস ও সবজির দাম। বাজারে গিয়ে গরু ও খাসি ও মুরগির মাংস, এবং মাছ কিনতে আগের চেয়ে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দাম দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তবে অপরিবর্তিত দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগির ডিম।

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন রাজধানীর মতিঝিল, মুগদা, খিলগাঁও, রামপুরা কাঁচাবাজার ঘুরে দোকানি ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত সপ্তাহের চেয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে আলুর দাম ছিল ১৬ থেকে ১৮ টাকা।

আর বেগুন গেল সপ্তাহে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও শুক্রবার ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শালগম ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা।

করলা প্রতিকেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে দাম বেড়ে হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা।

শিম প্রকারভেদে প্রতিকেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ২০ থেকে ৩২ টাকা, মূলা ৩০ টাকা, শশা ও খিরা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতিপিচ ১৫ থেকে ২০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শালগম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কচুরলতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মটরশুঁটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ২৪ থেকে ৩২ টাকা, লেবু প্রতি হালি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

আর কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, প্রতি আঁটি লাউ শাক ২৫ টাকা, লাল শাক, পালং শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ও ডাটা শাক ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজির প্রতিটিতেই ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

বাড্ডা কাঁচাবাজারে তাসলিমা সুলতানা নামে একজন ক্রেতা বলেন, গতকালও লাউ শাক ১৫ থেকে ২০ টাকায় কিনেছি। কিন্তু আজ ৩০ টাকার কম পাওয়াই যাচ্ছে না।

তবে বিক্রেতারা বলছেন, মৌসুম পরিবর্তনের কারণে এ বাড়তি দাম। বাজারে নগুন সবজি আসা শুরু করলে দাম কিছুটা কমে যাবে।

এদিকে এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ প্রকারভেদে কেজি প্রতি ২৪ থেকে ৩০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি রুই ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতলা ৪০০, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ২০০, সিলভার কার্প ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, আইড় ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি চলছে।

আর মেনি মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০, বাইলা মাছ প্রকারভেদে ২৫০ থেকে ৪০০, বাইন মাছ ৪০০ থেকে ৫০০, গলদা চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৮০০, পুঁটি ১৮০ থেকে ২০০, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০, মলা ৩২০ থেকে ৩০০, পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০, বোয়াল ৪৫০ থেকে ৫০০, শিং ৪০০ থেকে ৭০০, দেশি মাগুর ৪০০ থেকে ৭০০, শোল মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০, পাঙ্গাস ১৪০ থেকে ১৬০, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। এ সপ্তাহে ডিমের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান দোকানিরা। তারা জানান, ফার্মের লাল ডিম প্রতি হালি ৩০ থেকে ৩২ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম ৪৬ টাকা ও হাঁসের ডিম ৪৪-৪৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে দাম বেড়েছে গরুর ও খাসির মাংসের। মুগদা, খিলগাঁওসহ এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হলেও খাসির মাংস কিনতে হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ৪৮০ এবং ৫১০ টাকায় পাওয়া যেতো।

গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগিও প্রতিকেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। গেল সপ্তাহে ১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও আজ তা ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া এককেজি ওজনের প্রতিপিচ কক মুরগি ২৩০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা ও দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতা রফিক।

তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কারণে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর খোলাবাজারে লিটার প্রতি বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১০৭ টাকা ও খোলা সোয়াবিন ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর এসব বাজারে।

চালের আড়তদাররা জানান, প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৭ থেকে ৪০ টাকা দরে। মিনিকেট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, পাইজম ৪২ থেকে ৪৬ টাকা, নাজির শাইল ৪৫ থেকে ৬০ টাকা ও আটাশ ৪০-৪২ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। চালের দাম কিছুটা অপরিবর্তিত ছিলো।

খিলগাঁও কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা চাকরিজীবী আল-আমিন বলেন, একদিনের চেয়ে আরেকদিন দাম বেশি। কিন্তু আমাদের আয় তো নির্দিষ্ট। এভাবে বাড়লে সংসারের খরচ চালানোই দায় হয়ে যাবে।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন