৪০ হাজার কোটিরও বেশি জাটকা উৎপাদনের সম্ভাবনা

  13-11-2017 04:07PM

পিএনএস ডেস্ক: চলতি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের আশা করছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট চাঁদপুর নদীকেন্দ্রের ১৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি গবেষণা দল দেশের ৯টি পয়েন্টে গবেষণামূলক জরিপ চালিয়ে জানিয়েছে, এবার ৪৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। এ কারণে এবার ইলিশের পোনা বা জাটকা উৎপন্ন হবে ৪০ হাজার কোটিরও কিছু বেশি। যা গতবারের চেয়ে আড়াইগুণ বেশি। আগামী জাটকা মৌসুমে এসব পোনা সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে এ অর্থ বছরে ৬ লাখ মে. টন ইলিশ উৎপাদন করা সম্ভব।

গবেষণার বিজ্ঞানী দল মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন অংশ থেকে নমুনা ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে চূড়ান্ত জরিপ করে ফলাফল প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে দেখা যায় এ বছর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ডিম ছাড়ার ইলিশের পরিমাণ ৪৬.৪৭ শতাংশ, যা বিগত বছরের তুলনায় আড়াইগুণ বেশি। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে এ হার ছিলো ৪৩.৯৫ ভাগ এবং ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ডিম ছাড়ার হার ছিলো ৩৩.৪৬ ভাগ।

গবেষণায় অংশ নেয়া একজন গবেষক ডা. মাসুদ হোসেন খাঁন সাংবাদিকদেরকে জানান, এ বছর অধিক বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া এবং পানির প্রবাহ সব মিলে পরিবেশ ছিল স্বাভাবিক। যার কারণে অধিক পরিমাণ ইলিশ সমুদ্র থেকে নদীতে উঠে আসতে পেরেছে এবং নিরাপদে ডিম ছেড়েছে।

তিনি আরো জানান, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের অভিজানের ফলে ৬ লাখ ৬৮ হাজার ২৯১ কেজি ডিম উৎপাদন হয়। যার ফলে ৩৯ হাজার ২৬৮ কেজি জাটকা যুক্ত হয়, সর্বোপরি জেলেরা ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪১৭ মে. টন ইলিশ আহরণ করে। এর পূর্বের বছর ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ৩লাখ ৯৪ হাজার ৯৫১ মে. টন ইলিশ উৎপাদন হয়।

মৎস্য অধিদফতরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক শেখ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে ইলিশের উৎপাদন প্রতিবছর বেড়েই চলছে। আশা করছি চলতি অর্থবছরে সাড়ে ৫ লাখ থেকে ৬ লাখ টন ইলিশ উৎপাদিত হবে।

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও নদী কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক আনিছুর রহমান জানান, ইলিশের ডিম ছাড়ার হার পর্যবেক্ষণসহ পানির গুণাগুণ ও দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট দল জাহাজে চাঁদপুর থেকে যাত্রা শুরু করে। বিশেষ করে লক্ষ্মীপুরের রামগতি, হাতিয়া, মনপুরা, ভোলা, দৌলতখান, ইলিশা, মেহেন্দিগঞ্জ ও শরীয়তপুর এ ৯টি পয়েন্টে গবেষণামূলক জরিপ করে সেখানে পানির গুণাগুণ স্বাভাবিক পাওয়া যায়।

সরকার আগামী জাটকা মৌসুমে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দেশে ইলিশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও ইলিশ রফতানি করা সম্ভব হবে বলে জানান ইলিশ গবেষক আনিছুর রহমান।

উল্লেখ্য ওয়ার্ল্ড ফিশের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৬৫ শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাতীয় মাছ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ২৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ। যদিও এক যুগ ধরে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছিল।

সুত্র: ফেমাস নিউজ ২৪

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন