`যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটতে বাধ্য’

  16-05-2019 04:11AM

পিএনএস ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠা সত্ত্বেও যুদ্ধের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনি। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন জানে এই ধরনের সংঘর্ষ তার স্বার্থের অনুকূলে যাবে না।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আয়াতোল্লাহ খামেনি বলেন, এখন আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার অর্থ হবে বিষপান করা।

আয়াতোল্লাহ খামেনি মঙ্গলবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় ইরানের প্রেসিডেন্ট, পার্লামেন্ট স্পিকার, বিচার বিভাগের প্রধান, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্যগণসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নীতি নির্ধারণী কর্মকর্তাদের এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে একথা বলেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সঙ্ঘাত সামরিক পর্যায়ে যাবে না এবং আসলে কোনো যুদ্ধই হবে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মোকাবিলায় ইরানি জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এই সংঘাতে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটতে বাধ্য হবে।

আয়াতোল্লাহ খামেনি বলেন, “আমরা কিংবা তারা, যারাই মনে করে যুদ্ধ তাদের অনুকূলে যাবে না তাদের কেউই যুদ্ধ চায় না।”

দু’দেশের চলমান উত্তেজনাকে তিনি ‘আকাঙ্ক্ষার সংঘাত’উল্লেখ করে বলেন, এই সংঘাতে শেষ পর্যন্ত ইরান বিজয়ীর বেশে উন্নত শির নিয়ে বেরিয়ে আসবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার ইরানকে আলোচনার যে প্রস্তাব দিচ্ছেন তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আয়াতোল্লাহ খামেনি।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন যে সরকার ক্ষমতায় আছে তার সঙ্গে আলোচনায় বসা বিষপানের সমতুল্য। আলোচনা মানে দর কষাকষি করা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যেসব বিষয়ে দর কষাকষি করতে চায় সেগুলো আমাদের শক্তিমত্তার উৎস।

ইরানের এই সর্বোচ্চ নেতা বলেন, আমাদের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপারে তাদের আপত্তি। তারা চায় আমরা আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা কমিয়ে ফেলি যাতে তারা আমাদের ওপর হামলা করলে আমরা তাদের ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালাতে না পারি। কেউ বোকার স্বর্গে বাস করলে নিজের শক্তিমত্তার উৎস নিয়ে এমন আলোচনায় বসে।

আয়াতোল্লাহ খামেনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান যে প্রভাব বিস্তার করেছে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করতে চায়। এর অর্থ হচ্ছে, আলোচনায় বসে ইরান তার প্রভাব বলয় কমিয়ে ফেলুক। কাজেই দেখা যাচ্ছে, সুস্থ বোধসম্পন্ন মানুষের সঙ্গেও এসব বিষয় নিয়ে ইরান আলোচনায় বসতে পারে না। আর যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনে তো সুস্থ মানুষ নেই। এরা কোনো প্রতিশ্রুতি রক্ষা বা চুক্তি মেনে চলার ধার ধারে না। এদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দেয়া এবং এর প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী- সেন্টকম’কে তেহরানের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী বলে অভিহিত করার জের ধরে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠার মধ্যে এই ভাষণ দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।

সম্প্রতি আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে অন্তত একটি বিমানবাহী রণতরীসহ একাধিক যুদ্ধজাহাজ পাঠালে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন