কাশ্মীরে সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর মেয়ে ও বোন আটক

  16-10-2019 07:03AM



পিএনএস ডেস্ক: ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা সম্বলিত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের হাতে আটক হলেন রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ডা. ফারুক আব্দুল্লাহর মেয়ে সাফিয়া আব্দুল্লাহ খান ও বোন সুরাইয়া।

পুলিশ ওই দু’জনসহ বিক্ষোভরত অন্য নারীদেরকে আটক করেছে।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এসব নারী জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার ও এটিকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার বিরোধিতা করছিলেন।

বিক্ষোভকারী নারীরা পুলিশি নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে প্ল্যাকার্ড, পোস্টারসহ লালচকের প্রতাপ পার্কে জড়ো হয়েছিলেন। এরপরে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ সেখানে পৌঁছে প্রতিবাদী নারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং এক ডজনেরও বেশি নারীকে আটক করা হয়।

এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদেরকে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কাশ্মীরের নারীরা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারা অপসারণের একতরফা সিদ্ধান্ত ও রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।”

তাঁরা অবিলম্বে আটককৃতদের মুক্তি দেয়াসহ গ্রামীণ ও শহর এলাকাকে অসামরিকীকরণের দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা কাশ্মীরে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারের জন্য জাতীয় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশের কথাও বলেন।

ডা. ফারুক আবদুল্লাহ ও তার ছেলে ওমর আবদুল্লাহ আগে থেকেই আটক অবস্থায় রয়েছেন। ফারুক আবদুল্লাহকে জননিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়েছে।

এদিকে, জম্মু-কাশ্মীরে এসএমএস পরিসেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গতকাল (১৪ অক্টোবর) সোমবার প্রায় ৭২ দিন পরে পোস্টপেইড মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিসেবা চালু করা হয় কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পরেই এসএমএস পরিসেবা বন্ধ করে দেয়া হয়।

সোমবার কাশ্মীর উপত্যকার প্রায় ৪০ লাখ পোস্টপেইড মোবাইল ফোন চালু করা হয়। কিন্তু এখন সেখানকার মানুষের মধ্যে নয়া সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেখানে মোবাইল ফোন পরিসেবা পুনরুদ্ধার হলেও আউটগোয়িং কল মানুষের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগ মোবাইল ব্যবহারকারীদের গত ৭২ দিনের জন্য বিল পাঠানো হয়েছে এবং বিল জমা না দেয়ার কারণে তাদের বহির্গামী পরিসেবা বন্ধ করা হয়েছে। কাশ্মীরে ইন্টারনেট পরিসেবা এখনও চালু না হওয়ায় গ্রাহকরা বিল পরিশোধ করেনি।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা সম্বলিত সংবিধানের ৩৭০ ধারা ও ৩৫ ধারা বাতিল করে গোটা কাশ্মীরকে একতরফাভাবে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে ভারতের উগ্র-হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার।

এরপর থেকেই ১৪৪ ধারা জারি করে ভারত সরকার। তবে ধারা বাতিলের একদিন পর থেকেই ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ করেছে কাশ্মীরিরা। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে অনেকেই নিহত হয়েছে। কিন্তু ভারত সবসময়ই বিক্ষোভের কথা অশিকার করে আসছে। এর ফলে কাশ্মিরে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয় এবং সম্ভাব্য গোলযোগ প্রতিহত করতে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করা হয়।

পিএনএস/ হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন