এখন ইসরাইল স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চায়!

  28-04-2024 09:31AM




পিএনএস ডেস্ক: ইসরাইল এখন গাজা যুদ্ধের কার্যকর অবসান ঘটাতে আগ্রহী। ইসরাইলের এক সিনিয়র কর্মকর্তা হিব্রু ভাষার ওয়ালা নিউজ আউটলেটকে বলেছেন। এই প্রথমবারের মতো ইসরাইলের কোনো সিনিয়র কর্মকর্তা স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার কথা বললেন। তবে তিনি তার পরিচয় প্রকাশ করেননি।

উল্লেখ্য, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস শুরু থেকেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলে আসছে। তারা গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর প্রত্যাবর্তন এবং ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘরে ফেরার অধিকার দাবি করছে।

ইসরাইলের ওই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা আশা করি যে আমরা আন্তরিক আলোচনায় ফিরিয়ে আনার জন্য হামাসকে পর্যাপ্ত সুযোগ দিয়েছি। আমরা আশা করছি, তারা বুঝতে পারবে যে আমরা চুক্তির ব্যাপারে আন্তরিক, আমরা সত্যিই আন্তরিক। তাদের বোঝা দরকার যে যদি প্রথম পর্যায় বাস্তবায়িত হয়, তবে আমরা পরবর্তী পর্যায়গুলো বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো এবং যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারব।'

এর আগে ওয়ালায় প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, ইসরাইল এখন গাজায় 'দীর্ঘ সময়ের জন্য বিরতি' এবং গাজাবাসীদেরকে তাদের বাড়িঘরে ফেরা নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।

তবে অপর এক সিনিয়র ইসরাইলি কর্মকর্তা শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, ইসরাইল 'যুদ্ধ অবসানে রাজি নয়। আর এর বিপরীত খবর মিথ্যা।

গাজায় আটক ২ ইসরাইলি বন্দীর ভিডিও প্রকাশ হামাসের
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা গাজায় আটক দুই ইসরাইলি বন্দীর ডিভিও প্রকাশ করেছে। এতে তারা তাদের মুক্তি নিশ্চিত করতে একটি চুক্তি করার জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুম সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

শনিবার প্রকাশিত ভিডিওটি আগে হামাসের প্রকাশিত বন্দীদের ভিডিওর মতোই। ইসরাইল এসব ভিডিওকে 'মনোস্তাত্ত্বিক সন্ত্রাসবাদ' হিসেবে অভিহিত করেছে।

এবারের ভিডিওতে যে দুই ব্যক্তিকে দেখা যায়, তারা হলেন কেইথ সাইগেল, ৬৪, এবং ওমরি মিরান, ৪৭। তাদেরকে ফাঁকা ব্যাকগ্রাউন্ডে কথা বলতে দেখা যায়। তারা তাদের পরিবারের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন এবং মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার কথা বলেন।

মিরানকে ৭ অক্টোবর হামাসের অভিযানের সময় তাদের নাহাল ওজের এলাকা থেকে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের সামনে থেকে তাদের বাড়ি থেকে বন্দী করা হয়।

তিনি বলেন, 'আমি হামাসের হাতে ২০২ দিন ধরে বন্দী রয়েছি। এখানকার পরিস্থিতি অপ্রীতিকর, কঠিন এবং অনেক বোমা রয়েছে।' ভিডিওটি চলতি সপ্তাহেই গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা এখান থেকে যাতে নিরাপদে ও স্বাস্থ্যকরভাবে বের হতে পারে সেজন্য চুক্তি করার এটাই সময়। বিক্ষোভ অব্যাহত রাখুন, যাতে এখনই চুক্তি হয়।'

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরাইলের সর্বশেষ পাল্টা প্রস্তাবটি হামাস বিবেচনা করছে- এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর শনিবারের ভিডিওটি প্রকাশিত হলো। আলোচনার গতি বাড়ানোর জন্য মধ্যস্ততকারী মিসর একটি প্রতিনিধিদল ইসরাইল গেছে।

ভিডিওটি পাসওভারের ছুটির দিনে প্রকাশিত হয়। এই সময়ে মিসর থেকে মুক্তি লাভের ধর্মীয় কাহিনী উদযাপন করে ইহুদিরা।

ভিডিওতে কোনো তারিখের কথা বলা হয়নি। তবে মিরান বলেন, তিনি ২০২ দিন ধরে বন্দী আছেন। আর সাইগেল পাসওভারের ছুটির কথা বলেন। এতে বোঝা যায়, অতি সম্প্রতি ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আজ যুদ্ধের ২০৫তম দিবস।

ভিডিওতে একপর্যায়ে সাইগেলকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। তিনি গত বছর তার পরিবারের সদস্যদের সাথে ছুটি উদযাপনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে তারা আবার একত্রিত হতে পারবেন।

তিনি বলেন, 'আমরা এখানে বিপদে আছি। এখানে বোমা পড়ছে, প্রচণ্ড মানসিক চাপ আর সন্ত্রস্ত্র পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।'

তিনি বলেন, আমি আমার পরিবারকে বলব যে আমি তোমাদের সবাইকে খুবই ভালোবাসি। আমি ভালো আছি, এটা বলা গুরুত্বপূর্ণ।'

এর তিন দিন আগে হামাস আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল। তাতে বন্দী গোলবার্গ-পলিন কথা বলেন।

ডিভিওর শেষ অংশে ইসরাইলি জনসাধারণের জন্য এই বার্তা দেয় যে 'আপনাদের নাৎসি করার আপনাদের বন্দী সন্তান বা তাদের অনুভূতির কোনো দাম দেয় না। খুব বেশি দেরি হওয়ার আগেই যা প্রয়োজন, তা হলো চুক্তি।'

গত ৭ অক্টোবরের অভিযানের সময় প্রায় ২৫০ ইসরাইলিকে বন্দী করেছিল হামাস। ওই সময় নিহত হয়েছিল ১,১৩৯ জন।

এর প্রতিক্রিয়ায় হামাস গাজায় হামলা শুরু করে। তারা হামাসকে ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর হয়। এ পর্যন্ত অন্তত ৩৪,৩৮৮ ফিলিস্তিনি ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, এখনো গাজায় ১২৯ জন বন্দী রয়েছে। এদের মধ্যে ৩৪ জন বন্দী অবস্থায় নিহত হয়েছে।

তেল আবিব থেকে আল জাজিরার বার্নাড স্মিথ বলেন, বন্দীদের পরিবার ও বন্ধুরা তাদের স্বজনরা জীবিত আছে জেনে স্বস্তি পেয়েছে।

তিনি বলেন, "তারা বলছে যে 'সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে'। আমাদের দরকার প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দ্রুত যেকোনো চুক্তি করুন।" সূত্র : আল জাজিরা ও টাইমস অব ইসরাইল


পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন