আল্লাহর কাছে অশান্তি সৃষ্টিকারীরা যেমন

  31-12-2016 07:24AM



পিএনএস ইসলাম : মানুষের মধ্যে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা হৃদয় আকৃষ্ট করা কথা বলে, মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে অন্তরে কপটতা অবলম্বন করে। তারাই যখন কথাবার্তার পর ফিরে আসে, তখন তারা পথিমধ্যে মুসলমানদের শষ্যক্ষেত্র এবং পশু বিনষ্টের খেলায় মেতে ওঠে। অথচ আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে পশু-পাখি এবং শষ্যক্ষেত্র বিনষ্ট করে অশান্তি সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না। যা আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারিমে ইরশাদ করেন-

যখন সে কর্তৃত্ব লাভ করে, পৃথিবীতে তার সমস্ত প্রচেষ্টা-সাধনা নিয়োজিত করে বিপর্যয় সৃষ্টি এবং শস্যক্ষেত ও মানব বংশ ধ্বংস করার কাজে। অথচ আল্লাহ (যাকে সে সাক্ষী মেনেছিল) বিপর্যয় মোটেই পছন্দ করেন না। সুরা বাকারা-২০৫

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২০৫ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মুনাফিকদের হৃদয়গ্রাহী কথা এবং তাদের অনিষ্টতার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। আর এ কথাও ঘোষণা করেছেন যে, যারা জান-মালের ক্ষতি করে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। অনিষ্টতা প্রদর্শন করে তাদেরকে আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন না। তারা মারাত্মক ঘৃনিত। তারাই ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রু।

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মিষ্টি ও আকর্ষণীয় বক্তব্যদানকারী ব্যক্তিদের অশান্তি সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেছেন। তারা যখন মুসলমানদের সঙ্গে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে ফিরে আসে; তখন তারা মুসলমানদের ফসলী জমি এবং পশুসমূহকে জবাই করে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

আল্লাহ তাআলা তাদের এহেন কার্যকলাপ পছন্দ করেন না। এ আয়াতের বিশ্লেষনে হজরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘মুনাফিকদের শঠতা ও অন্যায় কার্যকলাপের ফলে আল্লাহ তাআলা বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেন। ফলে শস্যক্ষেত্র ও জীব-জন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আল্লাহ তাআলা এ সব বিবাদ ও অশান্তি সৃষ্টিকারীদের মোটেই পছন্দ করেন না।

এ দুষ্ট ও অসদাচরণকারীদের যখন উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে বুঝানো হয় তখন তারা উত্তেজিত হয়ে আরো বিরোধিতা করে এবং আল্লাহর অবাধ্য কাজ করে মারাত্ম পাপে জড়িয়ে পড়ে।

কুরআন এবং হাদিস বিদ্বেষীদের সব ষড়যন্ত্র ও চমৎকার কথাবার্তা ফাঁদে পড়ে ঈমান-আমল বরবাদ করা যাবে না। ইসলামের বিরোধিতায় মুনাফিকদের কর্মকৌশল থেমে নেই। তারা কথা যত মিষ্টিই বলুক না কেন প্রকৃতপক্ষে তারা ভিতরে ভিতরে মুসলমানের জান ও মালের ক্ষতি সাধনে সক্রিয়।

কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামি অনুশাসন মেনে চলতে হবে। মুনাফিক ও কুটকৌশল অবলম্বনকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ঈমানদার মুসলমানকে অনিষ্টকারীদের ক্ষতি থেকে বেঁচে থেকে তাদেরকে দ্বীনের পথে দাওয়াত দিতে হবে।

সুন্দর ও অশান্তিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন যাপন করতে হবে। আল্লাহ কর্তৃক বিধি-বিধান যথযথ পালনের মাধ্যমে ঈমানের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মুনাফিকদের মিষ্টি আচরণ, প্রাঞ্জলভাষা এবং উত্তম ব্যবহারের ফাঁদসহ ধন-সম্পদের ক্ষতি থেকে হিফাজত করুন। কুরআন-সুন্নাহর বিধান বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন।
আমিন।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন