কলেজ ছাত্রী হত্যায় পুলিশ নিস্কৃয়, আদালতের নির্দেশে তদন্ত

  25-04-2017 09:24PM

পিএনএস, ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে গৃহবধূ ও কলেজ ছাত্রী মারুফা আক্তারকে খুনের তদন্ত নিয়ে নলছিটি থানা পুলিশের অপতৎপরতা ও নিস্কৃয়তার অভিযোগে তার পরিবার আদালতের আশ্রয় নিলে আদালত বরিশাল পিবিআই’কে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হতভাগ্য মারুফার পরিবার গত ১৯ এপ্রিল খুনীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও নলছিটি থানা পুলিশ নানা তলবাহানা করেও এজাহার রেকর্ড না করায় বাধ্য হয়ে ঝালকাঠি জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে এ এমপি মামলা দায়ের করেন।

নিহত মারুফার মা লাকী বেগম বাদী হয়ে ৫জনকে নামধারী আসামী করে অভিযোগ করলেও জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক ইফতেখার উদ্দিন মোল্লা পুলিশ ব্যুরে্যা অব ইনভেষ্টিকেশন কে আগামী ২ মে তারিখের মধ্যে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। মোসা: লাকী বেগম তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ৪বছর পূর্বে নিহত মারুফা আক্তারকে বহরমপুর গ্রামের সুলতান হাওলাদারের পুত্র সুমন হাওলাদারের সাথে বিয়ে দিলেও জামাই সুমন বেকার হওয়ায় শুরু থেকেই বিভিন্ন ভাবে যৌতুকের দাবী করতে শুরু করে।

এক পর্যায়ে মেয়ের সুখশান্তি ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জামাই বিদেশে যাওয়ার জন্য বহু কষ্টে ৩ লাখ টাকা প্রদান করেন। কিন্তু স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর শ্বশুর বাড়ীর লোকজন তাকে সবসময় সন্দেহ, দৈহিক পরিশ্রম, মানষিক-শারীরিক নির্যাতন করতে শুরু করে। এসব বিষয় প্রবাসী স্বামী সুমনের কাছে জানালে সেও পরিবারের পক্ষ নিয়ে স্ত্রীকে অকথ্য গালাগাল দিতো। এঅবস্থার মধ্যে ঘটনার দিন ১৭ জুলাই বিকাল ৪টা/৫টার দিকে মারুফা গোপন তার মাকে ফোন করে তার উপর বিভিন্ন শারিরিক নির্যাতন কথা জানালে শ্বাশুরী ও ঝা শুনে ফেলে।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বোমাইল ছিনিয়ে নেয় এবং দেবর রিপন হাওলাদার, স্বপন হাওলাদার, শ্বশুর সুলতান হাওলাদার, শ্বাশুরী নেহার বেগম ও ঝা রুবিনা বেগম বেপরোয়া নির্যাতন করে হত্যা করে। পরে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে মারুফার মৃতদেহ নিয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পৌছলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা মৃত ঘোষনা করতেই শ্বশুর-শ্বাশুরী সহ সবাই মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায় ।নিহত মারুফার স্বজনরা জানায়, মারুফাকে আনতে আমরা হাসপাতালে ছুটে যাই ও ফোন করে পুলিশকে ঘটনা অবহিত করি। পরে ঝালকাঠি পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে ১৮এপ্রিল বিকালে মৃতদেহ আমাদের কাছে হস্তার করে।

রাতে দাফন শেষে ১৯ এপ্রিল বিকালে মারুফাকে খুনের দায়ে ৫জনকে আসামী করে নলছিটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ২২ এপ্রিল পর্যন্ত মামলা না নেয়ায় ২৩ এপ্রিল সোমবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। তারা আরো অভিযোগ করেছে, আমরা জানতে পারি যে অর্থশালী মারুফার খুনী শ্বশুর পরিবারকে রক্ষায় নলছিটি সদরের ও ভৈরবপাশা ইউনিয়নের দুই আওয়ামীলীগ নেতা মধ্যস্থতায় মোটা টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করায় নলছিটি থানা পুলিশ এজাহার গ্রহনে এতো গড়িমসি করছে। এমন কি হত্যাকান্ডের ১০ দিন অতিবাহিত হলেও ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন