পিএনএস ডেস্ক: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রিভিউ শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘প্লিজ, কসাই বলবেন না।’
শুনানিকালে অ্যাটর্নি জেনারেল একাধিকবার সাঈদীকে ‘কসাই’ হিসেবে অভিহিত করলে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
রবিবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা ৫মিনিট পর্যন্ত দু’পক্ষ শুনানি করা হয়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের সদস্যরা হলেন— আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও মির্জা হোসেইন হায়দার।
শুনানির শুরুতে আসামির খালাসের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুরে ছিলেন না। তিনি পরিবার নিয়ে যশোরে ছিলেন। সেখানে মসজিদের পাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি পরিবারসহ থাকতেন। তিনি একজন প্রফেশনাল বক্তা। ওয়াজ মাহফিল করে তিনি জীবন-ধারণ করেন। এটাই তাঁর পেশা।
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ওই সময় তো বর্ষাকাল ছিল, মে মাস। বর্ষাকালে তিনি কীভাবে ওয়াজ করতেন? মার্চ-এপ্রিল-মে এই তিন মাস ওয়াজ হয় কি-না?
তখন খন্দকার মাহবুব হোসেন ফের বলেন, সাঈদী সাহেব প্রফেশনাল বক্তা। তিনি সারা বছরই ওয়াজ করেন। এটা করেই তিনি সংসার চালাতেন।
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমার জানামতে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সমর্থক ছিল, তাদের পক্ষে অংশ নিয়েছিল, তাদের অনেকেই বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছে।”
প্রধান বিচারপতি বলেন, একাত্তরের বাস্তবতার মেঘ ৭৫-এর পর বুড়িগঙ্গা হয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে হিমালয়ে গড়িয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৭ জানুয়ারি আপিলের রায় থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দায়ের করেন সাঈদী। মোট ৯০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে খালাস পেতে ১৬টি যুক্তি দেখানো হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামির মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রিভিউ করে। উভয় পক্ষের রিভিউ শুনানি একসঙ্গে চলছে। সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।
পিএনএস /হাফিজুল ইসলাম
সাঈদীকে ‘কসাই’ না বলতে প্রধান বিচারপতির অনুরোধ
15-05-2017 02:35AM