টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি, সম্পাদকসহ ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা

  04-01-2018 09:12PM

পিএনএস : এবার দলীয় কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দলের ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করল দলের বিদ্রোহী পক্ষ। জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সহসভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন বাদি হয়ে টাঙ্গাইল দ্রুত বিচার আদালতে বৃহস্পতিবার এই মামলা দায়ের করেন।

ওই আদালতের বিচারক রুপন কুমার দাস মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় জেলা বিএনপির সভাপতি শামছুল আলম তোফা, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, সহসভাপতি আরফান আলী মোল্লা, সাদেকুল আলম খোকা, আতাউর রহমান জিন্নাহ ও জিয়াউল হক শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক আনিসুর রহমান, আবুল কাশেম ও খন্দকার রাশেদুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হামিদ তালুকদার, আশরাফ পাহেলী ও শফিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মনিরুল হক, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুজ্জামান জুয়েল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, জেলা তাতী দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি কর্মী মনি বেপারী, শাহীন তালুকদার, ইমন, সুমন, আব্দুল্লাহেল কাফি ও তানভীর আহম্মেদসহ অজ্ঞাত আরো ১৫/২০জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর রবিবার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বাদি হয়ে হাসানুজ্জামিলসহ বিদ্রোহী পক্ষের ১৫জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত ওই মামলাটি পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

হাসানুজ্জামিল শাহীন মামলায় অভিযোগ করেন, গত ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বালুচরায় দলের কর্মী সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে মিছিল নিয়ে তারা রওনা হন। পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা ফিরে আসে। পরে মিছিলসহ ভিক্টোরিয়া রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সভাপতি শামছুল আলম ওরফে তোফা এবং সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল তাদের হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে মিছিলের দিকে ফাঁকা গুলি করে। অন্যান্য আসামিরা মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের মারপিট করে। পরে তারা বিএনপি কার্যালয় ভাংচুর করে ক্ষতি সাধন করে এবং সেখানে ত্রাস সৃষ্টি করে।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, সরকারি দলের ইন্ধনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কিছু লোক দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি করার জন্য এই মামলা করেছে। এই চক্রটিকে দিয়ে সরকারি দল জেলা বিএনপিকে নানাভাবে হয়রানি করছে।

এ প্রসঙ্গে মামলার বাদি হাসানুজ্জামিল শাহীন জানান, অযোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে জেলা বিএনপির কমিটি করা হয়েছে। সেজন্যই তারা এই কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। কারো ইন্ধনে নয়, সন্ত্রাসী ঘটনার শিকার হয়েছেন বলেই মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মে কেন্দ্র থেকে জেলা বিএনপির ৩০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে শামসুল আলম ওরফে তোফাকে সভাপতি এবং ফরহাদ ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সভাপতি শামসুল আলম আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় কারাবন্দি সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলাতান সালাউদ্দিন টুকুর ভাই। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বেশীর ভাগ পদেই সালাম পিন্টু পরিবারের অনুসারিদের বসানো হয়েছে। সালাম পিন্টু পরিবার বিরোধীরা কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এনিয়ে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বিদ্রোহী পক্ষের চারজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন