আলোচনার দরকার নেই, মানুষের কাছে সত্য স্পষ্ট: প্রধানমন্ত্রী

  27-03-2017 08:25PM

পিএনএস : গণহত্যা দিবস পালন না করায় বিএনপি-জামায়াতের সমালোচানা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত প্রমাণ করে দিয়েছে তারা এখনও আলবদর, আল শামসদের সাথেই আছে। তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। যারা মুক্তিযুদ্ধে শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তাদের পাশে তারা নেই।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের ঘরের শত্রু বিভীষণরাই সমস্যা। এ দেশের মাটি এতই উর্বর যে, ক্ষেতভরা ফসলও হয়, আগাছা পরগাছাও জন্মে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে সেই আগাছা পরগাছাদের মনবেদনা শুরু হয়। যখন আমরা দেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে সবধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি, যখন দেশটা এগিয়ে যায় তখনই যেন অন্তর্জালা শুরু হয় তাদের। এরা নানা উল্টা-পাল্টা কথা বলে। সরকারের নানা দুর্নাম-বদনাম ছড়াতে থাকে। এসব আগাছা-পরগাছা মুক্ত করলেই দেশ ঝকঝকে চকচকে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ এবং বাঙালির বঞ্চনার ইতিহাস যেন না জানতে পারে পঁচাত্তরের পর সেভাবেই ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। পঁচাত্তরের পর ২১ বছর তারা মিথ্যা বয়ান গেয়ে গেছে।’

কে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলো তা নিয়ে আলোচনার দরকার নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনার দরকার নেই এ কারণে যে, মানুষের কাছে সত্য স্পষ্ট। হাইকোর্ট রায় দিয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যে বিতর্ক, সেটা উচ্চ আদালতই সমাধান করে দিয়েছে। এখন রায় যারা মানে না, তাদের উদ্দেশ্যটা কি?’

তিনি আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। নতুন প্রজন্ম সেই বিকৃত ইতিহাস পড়ে বড় হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে প্রকৃতটা জানতে শুরু করে। মাঝখানে আবারও খারাপ সময় গেছে। আমরা যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এলাম তখন থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকৃত কথা জানা যাচ্ছে।’

প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে প্রযুক্তির যুগে সঠিক বিষয়টি জানা যায়। বাংলাদেশের ইতিহাস আন্তর্জাতিক টেলিভিশনের আর্কাইভে গিয়ে তথ্য সংগ্রহেরও সুযোগ আছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে উন্নতি হয় কারণ, আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে আসি না, জনগণের ভাগ্য গড়তে আসি। আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি বলেই দেশ আজ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা কখনও নিজেদের শাসক হিসেবে মনে করি না। আমরা নিজেদের সেবক বলেই মনে করি। কিন্তু বিএনপি যখন ক্ষমতায় যায় তখন তারা নিজেদের ভাগ্য বদলানো নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কিভাবে টাকার মালিক হওয়া যাবে তারা শুধু সেই চেষ্টা করে।’

বিএনপি-জামায়াতের ‘চরিত্র স্পষ্ট’ উল্লেখ করে হাসিনা আরো বলেন, এদের চরিত্র সম্পর্কে সবসময় জাতিকে মনে রাখতে হবে। এরাই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে, যুদ্ধাপরাধীদের পুরস্কৃত করে। ক্ষমতায় যখন ছিল তখন কোনো উন্নয়ন না করে তারা বাংলার খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলে বিদেশ থেকে টাকা এনে, অনুদান এনে খেয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের চিন্তা কিভাবে মানুষের জন্য কাজ করা যাবে। এ দেশের সাধারণ মানুষ কিভাবে ভালো থাকবে, দেশের উন্নয়ন কিভাবে করবে সেটা নিয়ে কাজ করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে একদিন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব-এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। আর এভাবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন হবে।

তিনি বলেন, ‘সারাবিশ্ব বাংলাদেশকে বলে উন্নয়নের রোল মডেল। যখন সরকার গঠন করি সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা ছিল। কিন্তু আমরা প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগে ধরে রেখেছিলাম, কাউকে একটু বুঝতে দেইনি। সেটা এখন ৭ এর ওপরে পৌঁছেছে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা যখন সিলেটে জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছি, তখন স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতা মর্মবেদনায় ভুগছেন। জঙ্গিদের মদদদাতাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। যেভাবেই হোক আমরা এ দেশকে জঙ্গিমুক্ত করব। এ দেশে জঙ্গিদের ঠাঁই হবে না।’

দেশে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে বাড়ির মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কাকে ভাড়া দিচ্ছেন, কাদের ভাড়া দিচ্ছেন তা ভালো করে জেনে-বুঝে দেবেন। না হলে ক্ষতি কিন্তু আপনাদেরই হবে।’

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন