পটুয়াখালীতে বিএনপির প্রতিনিধি সভায় ১৪৪ ধারা জারী

  22-04-2017 09:52PM

পিএনএস ডেস্ক : পটুয়াখালীতে জেলা বিএনপির প্রতিনিধি সভাস্থলে পাল্টাপাল্টি অনুমতি চেয়ে বিএনপির দু’গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। দলীয় কোন্দলের জেরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘাত এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারী হওয়ায় নির্ধারিত সভা পন্ড হয়ে গেছে।

শনিবার সকাল ১০টায় শহরের শেরে বাংলা পাঠাগারে জেলা বিএনপি আয়োজিত তৃনমুল থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহামুদ চৌধূরীসহ অন্তত ডজন খানেক নেতার উপস্থিত থাকার কথা ছিলো। কিন্তু পটুয়াখালীতে আয়োজিত প্রতিনিধি সভায় অংশ না নিয়ে ঢাকা থেকে আগত কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা কুয়াকাটায় ভ্রমনে গেছেন বলে জানা গেছে।

শনিবার সকালে অন্তত এক ডজন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা থেকে পটুয়াখালীতে এসে প্রতিনিধি সভায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধূরী, কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিষ্টার সরোয়ার হোসেন, কর্নেল (অবঃ) শাহজাহান এবং মেজর (অবঃ) মিজানুর রহমান সড়ক পথে কুয়াকাটায় যাওয়ার পথে পটুয়াখালী শহরে প্রবেশ না করে কুয়াকাটায় একটি বনভোজন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার উদ্যেশ্যে চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির একাধীক নেতা।

জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলা বিএনপি আয়োজিত ২২ তারিখের পূর্ব নির্ধারিত প্রতিনিধি সভা সফল করতে জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এয়ারভাইস মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন চৌধূরীর পক্ষে সাধারন সম্পাদক এমএ রব মিয়া প্রশাসনের কাছে আবেদন করে অনুমতি নেয়। পরে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক স্নেহাংশু সরকার কুট্টি ও সাবেক সাধারন সম্পাদক শাহাদাত হোসেন মৃধা গ্রুপের একাধিক নেতা একই স্থানে প্রতিনিধি সভা, শহরের বটতলায় যুব সমাবেশ ও ছাত্র সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিক লিখিত আবেদন করেন। বিবাদমান গ্রুপের নেতারা একই স্থানে জনসভার অনুমতি চেয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়ায় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘাতের আশংকায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গত বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল রাতে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন সভাস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারী করেন এবং সকল ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষনা করেন।

পরে ২১ এপ্রিল শুক্রবার দুপুর থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরির নিজ বাসভবন সংলগ্ন এলাকা ও এর আশ পাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। ওই এলাকায় সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
এদিকে পটুয়াখালীতে প্রতিনিধি সভায় অংশ নিতে কেন্দ্রীয় আগত কয়েকজন নেতা ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে বরিশাল নেমে সভার উদ্যেশ্যে রওনা হয়ে পটুয়াখালী-বরিশাল সড়কের শহরের চৌরাস্তা এসে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারী আর ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে তাই সভাস্থলে না এসে ওই চার নেতা কুয়াকাটায় চলে যান।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক এমএ রব মিয়া জানান, পুলিশের বাধায় কেন্দ্রীয় চার নেতা পটুয়াখালীতে এসেও শহরের প্রবেশ করতে পারেনি। তাই তারা কুয়াকাটার উদ্দ্যেশে রওনা হয়ে গেছেন।

অপরদিকে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক স্নেহাংশু সরকার কুট্টি জানান, বিধি মোতাবেক কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা পর্যায়ে এই প্রতিনিধি সভার আয়োজন করেননি। গলাচিপা-দশমিনা এবং পটুয়াখালী উপজেলা সদরে বিএনপির কোন কমিটি নেই। ফলে কোন ভাবেই নেতারা এই সভার আহবান করতে পারেননা। বর্তমান বিএনপির সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী মাত্র দশ বছর বিএনপিতে যোগ দিয়ে এমপি মন্ত্রী হয়েছেন। আর যারা জন্ম থেকে বিএনপির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে তাদের স্থান হয়নি কমিটিতে। যার জন্য পটুয়াখালীতে বিএনপির এই বেহাল দশা।

তিনি আরো জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা কুয়াকাটায় বনভোজনে অংশ নিয়েছেন তা আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল। পটুয়াখালীর প্রতিনিধি সভা ছিল ব্যানার মাত্র।

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানান, সুরাইয়া ভবন এবং শের-ই-বাংলা সড়কসহ আশ পাশের এলাকায় শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারী করেছেন। চৌরাস্তা এলাকায় বিএনপির নেতাদের পুলিশি বাধা দিয়ে শহরের প্রবেশ করতে না দেয়ার দাবী ভিত্তিহীন।



পিএনএস : জে এ মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন