দেশের রেমিটেন্স আয় কমেছে আট মাসে ১৮

  23-04-2017 01:26AM

পিএনএস ডেস্ক: বিশ্বব্যাংকের এক হিসেব বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাংলাদেশের রেমিটেন্স আয় কমে গেছে শতকরা প্রায় ১৮ ভাগ। এ হিসেব বলছে, সারা দুনিয়া জুড়েই প্রবাসীদের আয়ের প্রবাহ কমছে।

বিশ্বব্যাংকের এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিগত বছরে বিশ্বজুড়ে রেমিটেন্স প্রবাহ শতকরা চার ভাগের মতো কমে গেছে।

বলা হচ্ছে রাশিয়ার দুর্বল অর্থনীতি এবং জ্বালানী তেলের দাম কমে যাওয়ার দরুন সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, ওমান বা কুয়েতের মতো উপসাগরীয় দেশগুলোর অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, পশ্চিমা দেশগুলোতে অভিবাসী-বিরোধী মনোভাব তৈরি হওয়া - এ রকম নানা কারণেই এই নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম শীর্ষ খাত হচ্ছে প্রবাসী আয়। তাই অবধারিত ভাবেই এর প্রভাব এসে পড়ছে দেশটির অর্থনীতিতে।

ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে মাইগ্রেশন অ্যান্ড রেমিটেন্স ফ্যাক্টবুক ২০১৬ শিরোনামের এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার মোটে চার মাস বাকী থাকতে রেমিটেন্স আয় কমে গেছে শতকরা প্রায় ১৮ ভাগ।

ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলছিলেন, প্রতিবেদন অনুযায়ী মূলত দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর প্রবাসী আয়েই গত বছর সবচাইতে বড় ধাক্কাটা লেগেছে।

এর আগে রেমিটেন্স খাতে বছর বছর উন্নতিই দেখেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ধাক্কাটা আসে গত বছর। এক বছরে প্রবাসী আয়ে ঘাটতি তৈরি হয় দেড়শ কোটি ডলারের উপরে।

আর চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার মোটে চার মাস বাকী থাকতে হিসেব বলছে, রেমিটেন্স আয় কমে গেছে শতকরা প্রায় ১৮ ভাগ।

এখন বিশ্বব্যাংক যখন প্রতিবেদন দিয়ে বলছে, বিশ্ব জুড়েই কমেছে রেমিটেন্স প্রবাহ, তখন সংখ্যার বিচারে বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম জনশক্তি জোগানদাতা দেশ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে একটা প্রভাব পড়বে - সেটা নিশ্চয়ই আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

উনিশশ ছিয়াত্তর সালে আনুষ্ঠানিকভাবে হিসাবরক্ষণ শুরু হবার পর বাংলাদেশে সবচাইতে বেশী প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স এসেছিল ২০১৫ সালে, সে বছর বাংলাদেশ ব্যাংকে রেমিটেন্স জমা পড়েছিল দেড় হাজার কোটি ডলারের বেশী।

তবে এখন বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী প্রবাসী আয় প্রবাহ কমে যাওয়ার যেসব কারণ উল্লেখ করা হচ্ছে, তার সাথে আরো কিছু কারণ যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে।

গত মাসে বিবিসি বাংলার এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, অনেক প্রবাসীই বৈধ ব্যাংকিং পথে বাংলাদেশে টাকা পাঠাচ্ছেন না, মুদ্রায় বিনিময় হারে হেরফেরের কারণে। অবৈধ পথে টাকা পাঠানোয় অর্থ যদিও বাংলাদেশে আসছে, কিন্তু বৈধ পথে না আসায় তা অর্থনীতির মূল ধারায় যুক্ত হচ্ছে না, এ নিয়ে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকই গত মাসে দেয়া বক্তব্যে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল।

এদিকে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে কিছুটা আশার কথাও শোনানো হচ্ছে, বলা হচ্ছে আগামী অর্থবছরে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি কাটিয়ে উঠবে বিশ্বব্যাপি প্রবাসী আয়ের প্রবাহ এবং দেখা যাবে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি।

আশা করা হচ্ছে সে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির প্রভাবও কিছুটা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসে পড়বে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন