জাবিতে সাংস্কৃতিক চর্চায় ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েরা

  28-04-2017 07:08AM




পিএনএস ডেস্ক: সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা সৃষ্টিশীল এবং সৃজনশীল কাজের সহায়ক, যা চর্চার মাধ্যমে মানুষের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটে। আর বিকশিত প্রতিভা মননশীল ও সমৃদ্ধশালী সমাজ গঠনের জন্য অত্যাবশক। মুক্তবুদ্ধি ও মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার চরণ ক্ষেত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী নামে পরিচিত। এখানকার পরিবেশ মুক্ত প্রাণের সন্ধান করে। বিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যমের কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি একেবারেই আলাদা।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংস্কৃতি চর্চায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সবসময় মুখরিত থাকে জাবি ক্যাম্পাস। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই মুক্ত সংস্কৃতি চর্চাকে অতিমাত্রায় অলংকৃত করে পূর্ণতা দান করেছে মেয়েদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মেয়েদের ভূমিকা প্রশংসনীয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় শতাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে। এই সব সংগঠনের মাধ্যমে জাবির মেয়েরা মুক্ত চিন্তার চর্চা করে, বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটায়। তারা আকাশ সংস্কৃতির পরিবর্তে বাঙ্গালী সংস্কৃতি চর্চায় আত্বনিয়োগ করছে।

সংস্কৃতি চর্চায় যেসব সংগঠন প্রতিনিয়ত ব্যস্ত থাকে তার মধ্যে ধ্বনি, জলসিঁড়ি, আনন্দন, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার (অডিটরিয়াম), জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার ( টি এস সি), জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং অর্গানাইজেশন ইত্যাদি উলেখযোগ্য। এই সব বিনোদনমূলক সংগঠনে মেয়েরা আন্তরিকভাবে কাজ করছে।

এই সব সংগঠনের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য হচ্ছে মেয়ে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সংগঠন গুলোর মোট সদস্যের মধ্যে প্রায় ধ্বনির ৭৫ শতাংশ, জলসিঁড়ির ৫০ শতাংশ, আনন্দনের ৫০ শতাংশ, জুডোর ৪০ শতাংশ, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটরিয়াম) ৪০ শতাংশ, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (টি এস সি) ৬০ শতাংশ সদস্য হচ্ছে মেয়ে।

মেয়েদের অনেক প্রতিকূলতা থাকলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীরা স্বত:স্ফুর্তভাবে এই সব সংগঠনে কাজ করছে। এই সংস্কৃতিক সংগঠনগুলোতে সপ্তাহে প্রায় চার থেকে পাঁচ দিন বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সময় দিতে হয়।

মেয়েরা এসব সংগঠনে নিয়মিত গান, কবিতা, নাটক, নিত্য ও বির্তক অনুশীলন করে আধুনিক সমাজে নিজেদের পথকে সুপ্রশস্ত করছে। একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি তারা এখানে সংস্কৃতিকে ভালোবেসে অনেক সময় দেয়। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিভাগের মেয়েরা ক্লাস, ল্যাব, পরীক্ষার মধ্যেও সংস্কৃতিকে অন্তরে ধারণ করে কাজ করে নিরলসভাবে।

সাংস্কৃতিক বলয় সৃষ্টিকারী এই সব সংগঠনের মাধ্যমে মেয়েরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে তাদের চিন্তার বহি:প্রকাশ ঘটায়। জাবি ক্যাম্পাসে প্রতিবছর নবীনদের আগমনে সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই সব উৎসবে বিশিষ্ট নাট্যকার, লেখক, কবি এবং শিল্পীদের নাটক, কবিতা ও গান পরিবেশন করা হয়। অধিকাংশ পরিবেশনাগুলোর গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় থাকে মেয়েরা।

নাট্য উৎসব, নাট্য পার্বণ, আবৃতি উৎসব, সাংস্কৃতিক মেলা ইত্যাদি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের নেপথ্যে থেকে মেয়েরা যথাযথ ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি সময়ে জাবি ক্যাম্পাসের মেয়েরা বিভিন্ন বিনোদনমূলক মিডিয়াতে যোগ দিচ্ছে। আবার সংবাদকর্মী হিসেবে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কাজ করছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন