পিএনএস ডেস্ক:বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কোপানলে পড়ে গত কয়েক বছর ধরে আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও আবহাওয়ার মধ্যেও বিচিত্র পরিবর্তন ও আচরণ প্রত্যক্ষ করছি। আবহাওয়ার এ রকম পরিবর্তিত পরিবেশের বিচিত্র আচরণে এ বছর বৈশাখের শুরুতেই বৃষ্টিও হচ্ছে এলোমেলো, গরমও পড়ছে তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। এতে বেড়েছে গরম ও হিট স্ট্রোকের প্রাণঘাতি ঝুঁকি। বিশেষ করে এই তীব্র গরমের ফলে ইট পাথরের কর্মব্যস্ত যান্ত্রিক রাজধানী ঢাকা শহরের মানুষের জন্য হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। কাজেই এবারের গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহের জন্য আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
তীব্র গরমে কিছু সহজলভ্য কৌশল অবলম্বন করে নিজেকে শীতল রাখার আয়োজনে কার্পণ্য করলে চলবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ কাজে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ঠাণ্ডা ও পুষ্টিকর পানীয়। বিশেষ করে হিট স্ট্রোক সামলাতে দেহকে সব সময় হাইড্রেটেড রাখতে হবে। প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাসের বেশি পানি পান করাকে বাধ্যতামূলক করে দিতে হবে। এ ছাড়াও আরো কিছু পানীয়র কথা উল্লেখ হলো। এগুলো নিয়মিতভাবে অনুসরণ করলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকবে শূন্যের কোঠায়। এই তীব্র খরতাপে আপনি থাকবেন ফুরফুরে ও আরামে।
১. হিট স্ট্রোক প্রতিরোধের খাবার
শরীরটাকে চাঙ্গা করে এমন যেকোনো পানীয় ও খাবার বেছে নিতে পারেন। ঘামের কারণে যে লবণ বেরিয়ে যায় তা পূরণ করতে হবে। লেবু ও চিনি শরবত বা স্বাস্থ্যকর যেকোনো জুস খাদ্য তালিকায় রাখবেন।
২. আমের জুস
কাঁচা আমের জুস দারুণ সুস্বাদু পানীয়। তা ছাড়া শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ। আমের রসের পুষ্টিকর উপাদান দেহের বেড়ে যাওয়া তাপমাত্রা সামলে নিতে কার্যকর । কাঁচা আমের জুসের সঙ্গে সামান্য লবণ, মরিচ, জিরার গুঁড়া আর বিশুদ্ধ পানি মিশিয়ে নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন গরমের বন্ধু আমের জুস।
৩. লেবু পানি
নতুন করে বলার কিছু নেই। লেবুর শরবত নিয়মিত খেতে হবে। লেবু-পানির চিনি গরমে দেহের গ্লুকোজের মাত্রা বজায় রাখে। গরমের দিনগুলোতে দিনে দুই বার এই পানীয় খেতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। এই শরবতে রয়েছে দেহকে হাইড্রেটেড রাখার উপাদান। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর এটি।
৪. ডাব বা নারকেলের পানি
উপাদেয় ও পুষ্টিকর। প্রতিদিন অন্তত দুটি ডাব বা নারকেলের পানি পান করুন। দেহে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে। আবার দেহে পানির অভাবও থাকবে না।
৫. পেঁয়াজ
হয়তো ভাবছেন, এ তালিকায় আবার পেঁয়াজ আসে কোত্থেকে? এতে আছে দেহকে ঠাণ্ডা করার উপাদান। হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর পেঁয়াজ। তাই তরকারি, সালাদ ও অন্যান্য খাবারের সঙ্গে পেঁয়াজ রাখুন নিয়মিত ।
৬. বাটার মিল্ক
হিট স্ট্রোক থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বাটার মিল্ক এক অনন্য খাবার। এটা হজমেও সহায়ক। অন্ত্রে পিএইচ এর মাত্রাও ঠিকঠাক রাখতে বেশ কাজের।
৭. বেলের শরবত
গ্রীষ্মের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পানীয় বেলের শরবত। এটি গ্রীষ্মের গরমে দারুণ কাজে দেবে। হিট স্ট্রোক থেকে নিরাপত্তা দেবে বেলের শরবত। গুড়, জিরার গুঁড়া, বিট লবণ মিশিয়ে একে মুখরোচক করতে পারেন। এই শরবত ফাইবার আর পুষ্টিতে পরিপূর্ণ। যা অন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী ভূমিকা রাখে।
৮. তরমুজ ও আনারস
গ্রীষ্মের অন্যতম মৌসুমী ফল তরমুজ ও আনারস । তরমুজ হতে পারে এই গরমের রোজকার খাবার। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে খনিজ লবণ ও গ্লুকোজ। যা এই গরমের তীব্রতায় দেহে প্রয়োজনীয় বাড়তি গ্লুকোজ, খনিজ লবন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের যোগান দিয়ে আপনাকে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখতে সক্ষম।
পিএনএস/আলআমীন
গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাচার উপায়
28-04-2017 11:54AM