যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে কেন চীনের সাথে বন্ধুত্ব?

  23-10-2016 09:30PM

পিএনএস ডেস্ক : চীন সফর শেষে দেশে ফিরেছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে। তার চীন সফরকালে দুই দেশের মধ্যে কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য ও নিরাপত্তাসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে ১৩টি সমঝোতা-পত্রে সই করেছেন।

তারা চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বৈঠকে বসার পর এইসব সমঝোতা হয়েছে। দুই প্রেসিডেন্টই ম্যানিলা ও বেইজিংয়ের দ্বিপক্ষীয় সমস্যাগুলো সমাধানের ব্যাপারে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন বলে জানা গেছে।

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে আলোচনা এবং শলা-পরামর্শের ওপর জোর দিয়েছেন।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে এমন সময় চীন সফর করেছেন যখন তার আগের প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর কর্তৃত্বের বিষয়ে চীনের বিরুদ্ধে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

হেগের আদালত দক্ষিণ চীন সাগর বিষয়ে চীনা অবস্থানের নিন্দা জানিয়েছে ও এই সাগরে ফিলিপাইনের কথিত অংশ ছেড়ে দিতে বলেছে। কিন্তু বেইজিং হেগের আদালতের ওই রায়কে কোনো গুরুত্বই দেয়নি, বরং ওই রায়কে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

বেইজিং দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানার দাবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এ বিষয়ে মতভেদ কেবল দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করতে হবে। অন্য কথায় চীন এ সংকটের আন্তর্জাতিক রূপ দেয়ার বিরোধী।

চীনে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টের এই সফর এবং এ সফরের প্রাক্কালে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ম্যানিলার বন্ধুত্ব ছিন্ন করে বেইজিংয়ের দিকে তার মুখ ফেরানোর চাঞ্চল্যকর ঘোষণা থেকে বোঝা যায় রাজনীতিতে স্থায়ী শত্রু ও মিত্র বলে কিছু নেই। একইভাবে স্থায়ী হুমকি বলেও কিছু নেই বরং স্বার্থই হচ্ছে স্থায়ী বিষয়।

ফিলিপাইন ছিল দীর্ঘকাল ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন সরকারের সামরিক মিত্র। সেই শীতল যুদ্ধের যুগেই আমেরিকা ফিলিপাইন সংলগ্ন সুবিক ও ক্লার্ক উপসাগরকে সেনা মোতায়েনের কাজে ব্যবহার করে আসছে।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে কেবল কিছু সময়ের জন্য গ্লোরিয়া অ্যারোয়ো ছাড়া আর কেউই মার্কিন সেনাদেরকে ফিলিপাইন ছেড়ে যেতে বলার সাহস দেখাতে পারেননি। কারণ ফিলিপাইন মার্কিন সরকারের সঙ্গে সামরিক চুক্তির নাগপাশে বন্দী হয়েছিল।

রদ্রিগো দুতের্তের আগের ফিলিপিনো প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো মার্কিন সরকারের সঙ্গে দশ বছরের সামরিক নির্ভরতার এক চুক্তি করেছিলেন। দেশটির নানা পেশা ও শ্রেণীর নেতৃবৃন্দ এবং কয়েকজন সংসদ সদস্যও মনে করেন যে ওই চুক্তির ফলে ফিলিপাইনের কেবল দারিদ্র, বঞ্চনা ও অনগ্রসরতাই জোরদার হয়েছে।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে ম্যানিলার বন্ধুত্ব ছিন্ন করে বেইজিংয়ের দিকে মুখ ফেরানোর কারণ হিসেব দুতের্তে ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের সহিংস নীতিকে দায়ী করেছেন।

ফিলিপাইনের এ অবস্থানকে এ অঞ্চলে চীনের সহিষ্ণু কূটনীতির বিজয় ও মার্কিন আধিপত্যকামী ও বলদর্পী নীতির পরাজয়ের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা যায়।
সূত্র : ওয়েবসাইট

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন