উদ্বিগ্ন ভারত; যে কোনো সময় ভারত মহাসাগরে ঢুকতে পারে চীন

  20-01-2017 07:58AM

পিএনএস ডেস্ক: চীন যেভাবে ভারত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বিনা বাধায় প্রভাব বাড়াচ্ছে, তাতে ভারতের ‘উদ্বিগ্ন’ হওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন নৌ-বাহিনীর প্যাসিফিক কম্যান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস জুনিয়র।
ভারত এবং আমেরিকা যৌথভাবে চীনা নৌ-বাহিনীর গতিবিধির উপর নজর রাখছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে হ্যারিস জুনিয়র জানান, চীনা নৌ-বাহিনীর ভারত মহাসাগরে দ্রুত নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করতে চাইছে। চীনের এই প্রভাব বৃদ্ধি রুখতে অবিলম্বে নিজেদের নৌ-বাহিনীকে আরো সক্রিয় করে তোলা উচিত ভারতের।
অ্যাডমিরাল হ্যারিস জুনিয়রের কথায়, ‘এই মুহূর্তে ভারত মহাসাগরে চীনা নৌবহরের গতিবিধি আটকানোর কোনো উপায় নেই।’
চীনের এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার লিয়াওনিং-এর নেতৃত্বে একটি চীনা নৌবহর এখন দক্ষিণ চীন সাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরের এক বড় এলাকায় টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে মালাক্কা প্রণালী পেরিয়ে বঙ্গোপসাগর, আন্দামান সাগর বা আরব সাগরের দিকে সে চীনা নৌবহর এখনো আসেনি।
মার্কিন নৌ-বাহিনী এই কর্মকর্তা মনে করছেন, চীনা নৌবহর এ দিকে টহল দিতে এখনো আসেনি বলে ভবিষ্যতেও আসবে না, এ রকম ভাবার কোনো কারণ নেই। চীনা সাবমেরিনগুলো যেভাবে মাঝেমধ্যেই বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে হানা দিয়ে গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর চেষ্টা করছে, ঠিক সেভাবেই চীনের এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ারও এই অঞ্চলে যখন তখন আসতে পারে বলে তার মত।
কিন্তু অ্যাডমিরাল হ্যারিস এও বলেছেন যে, এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার পাঠিয়ে ভারতকে চাপে ফেলার ক্ষমতা চীনের নেই।
তিনি বলেন, ‘এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার অপারেশনের ক্ষেত্রে ভারতীয় নৌ-বাহিনী দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা চীনা নৌ-বাহিনী চেয়ে অনেক বেশি।’
আমেরিকার সুবিশাল এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ারগুলোর সঙ্গেও যে চীনের লিয়াওনিং কোনোভাবেই বুঝতে পারবে না, সে কথাও অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস জুনিয়র মনে করিয়ে দিয়েছেন।
ভারতীয় নৌ-বাহিনী জানিয়েছে, চীনা সাবমেরিনগুলো যেভাবে লুকিয়ে ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন এলাকায় হানা দিচ্ছে, তাতে বাধা দেয়ার চেষ্টা ভারত এখন করবে না। কারণ চীনের সাবমেরিনগুলো সব সময় যে আন্তর্জাতিক জলসীমা ছেড়ে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ছে, এমনটা নয়। তাই তাদের টহলদারিতে আপত্তি করার কিছু নেই বলেই ভারত মনে করছে।
তবে দিল্লি এবং ওয়াশিংটন যৌথভাবে সতর্কতাও অবলম্বন করেছে। চীনা নৌ-বাহিনীর কোন রণতরী কখন কোথায় থাকছে, তার উপর সর্বক্ষণ নিবিড় ভাবে নজর রাখা হচ্ছে। আমেরিকার কাছ থেকে কেনা পি৮-১ অ্যান্টি সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার জেটগুলোকেই ভারত এ কাজে ব্যবহার করছে।
অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস জুনিয়রের কথায়, ‘পি৮ হল পৃথিবীর সেরা অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার ব্যবস্থা।’
ভারত পি৮-১ এবং আমেরিকা পি৮-এ জেট ব্যবহার করে চীনা ডুবোজাহাজগুলোর ওপর নজর রাখছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে খুব বেশি তথ্য আমি দেব না। তবে এটুকু বলতে পারি যে চীনা নৌ-বাহিনীর জাহাজগুলোর গতিবিধি সারাক্ষণ আমাদের নজরে রয়েছে এবং আমরা পরস্পরকে (ভারত ও আমেরিকা) সর্বক্ষণ সেই তথ্য জানাচ্ছিও।’
সূত্র: আনন্দবাজার

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন