হিজাব ছাড়তে না চাওয়ায় স্কুলে চাকরি পেলেন না ব্রিটিশ নারী

  20-11-2017 08:10PM


পিএনএস ডেস্ক: হিজাব ছাড়তে না চাওয়ায় কুয়েতের একটি নার্সারি স্কুলের শিক্ষক হিসাবে বিবেচিত হননি ব্রিটিশ নারী ফৌজিয়া খাতুন। ইংরেজিমাধ্যম স্কুলটি চাকরি করতে হলে তাকে অবশ্যই হিজাব অপসারণ করতে হবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়ে দেয়।

কুয়েতের মতো পুরোপুরি একটি মুসলিম দেশের একটি স্কুলের এমন আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ এই নারী।

ফৌজিয়া খাতুনের (২৩) আশা ছিল উপসাগরীয় মুসলিম এই দেশটিতে শিক্ষক হিসেবে কাজ করার। এজন্য তিনি দেশটির একটি নার্সারি স্কুলের ইংরেজী শিক্ষক পদে আবেদন করেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের এই কথায় তিনি অত্যন্ত হতাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।

স্কুলের এইচআর বিভাগ থেকে তাকে একটি ইমেল পাঠানো হয়েছে। এই ইমেলে বলা হয়, ‘এটি একটি ইংরেজি স্কুল। এ কারণে বাবা-মায়েরা তাদের শিশুদের জন্য হিজাব পরিহিত শিক্ষিকা চান না।’

এতে আরো বলা হয়, স্কুলটিতে চাকরি করতে চাইলে আপনাকে স্কুলে প্রাঙ্গনে মাথা হিজাব পরিধান করতে দেয়া হবে না এবং নিয়ে কোনো ধরণের নেগোশিয়েশনের অনুমোদন দেয়া হবে না।

‘ইংলিশ প্লেগ্রুপ এডুকেশনাল’ প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই দাবি করে আসছে যে, হিজাব পরিহিত স্টাফদের গর্বের সঙ্গে তারা নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

স্কুলটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘ইংলিশ ন্যাশনাল কারিকুলাম অনুযায়ী হাই প্রোফাইল ইংরেজি বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের দ্বারা শিশুদের ইংরেজি শেখানো হয়।’

ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ফৌজিয়া খাতুনের জন্ম ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের ব্র্যাডফোর্ডে। বর্তমানে তিনি একজন সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, তাদের পাঠানো ইমেইলটি ছিল পুরোপুরি বৈষম্যমূলক।

তিনি বলেন, ‘ইমেলটি পড়ার পর আমি আমার নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। হিজাব ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বেড়িয়ে আসার জন্য বলাটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। এটি আমার ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে না। হিজাব আমার জীবনের একটি অংশ।’

ফৌজিয়া বলেন, ‘আমি একজন স্বাভাবিক ব্রিটিশ মেয়ে এবং আমার হিজাব একই পরিচয়ের অংশ। তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে ব্রিটিশ বাবা-মা কিংবা ইংরেজী স্কুল হিজাব পরিধানের কারণে আমাকে খুব আক্রমণাত্মক করতে চাইবে না। আমি ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেছি এবং আমি একজন ইংরেজ।’

তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ডে বসবাসের সময়ে আমি আমার জীবনে কখনোও ইসলামোফোবিয়ায় সম্মুখীন হয়নি। তাই প্রথমবারের মতো এটি আমার জন্য একটি উদ্ভট অভিজ্ঞতা। এটি আরো বেশি বিস্ময়কর যে দেশটির ৯৯ শতাংশই মুসলিম।’ সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস

পিএনএস/কামাল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন