ভারতে গণধর্ষণের শিকার তরুণীর মরদেহ ছিনিয়ে নিয়ে পোড়াল পুলিশ

  30-09-2020 01:43PM

পিএনএস ডেস্ক: ভারতে পুলিশের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের শিকার এক তরুণীর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। হাথরসে অঞ্চলে গণধর্ষণের এ ঘটনা নিয়ে গড়িমসি করলেও গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে তরুণীর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে পুলিশ। এ ছাড়া এ ঘটনার সময় তরুণীর আত্মীয়-স্বজন এবং গ্রামবাসীদরা বাধা দিতে গেলে তাদের একটি ঘরে ঢুকিয়ে আটকে রাখা হয়। তরুণীর বাবাকেও তুলে নিয়ে গেছে অঞ্চলটির পুলিশ।

কলকাতার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় জানিয়েছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করে হাথরসে এলাকার ৪ যুবক। শারীরিক অত্যাচারও চালানো হয় তার উপর। পরে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যার চেষ্টা করে তারা। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে গেলে দেখা যায়, তরুণীর মুখের একাধিক জায়গা এবং জিভ কামড়ের গভীর ক্ষত। ভুক্তভোগীর দুই পা এবং একটি হাত অসাড় ছিল। শিরদাঁড়া এবং ঘাড় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। প্রথমে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তরুণীর।

আনন্দবাজার পত্রিকা আরও জানিয়েছে, গতকাল মৃত্যুর পর রাত ১০টা ১০ মিনিটে তরুণীর মরদেহ তার পরিবারের হাতে ছেড়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মরদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে মৃতের পরিবারের।

মৃতের বাবার অভিযোগ, তাদের কিছু না জানিয়েই পুলিশ তার মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে চলে যায়। হাসপাতালের সামনে তারা অবরোধ করলে পরে সেখান থেকে তাদের সঙ্গে নিয়ে হাথরসের উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ।

মরদেহ হাথরসে পৌঁছলে ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন, আত্মীয়-স্বজন এবং গ্রামবাসীরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তাদের দাবি ছিল সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত মেয়েকে দাহ করবেন না তারা। শুরুর দিকে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক থাকলেও মধ্যরাতে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। পরিবারের লোকজন-গ্রামবাসীদের উপেক্ষা করেই পুলিশ মৃতের দেহ ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

এ সময় ওই তরুণীর পরিবারের লোকজন, আত্মীয়-স্বজন এবং গ্রামবাসীদের তালাবন্ধ করে রাখে পুলিশ। রাত তিনটার দিকে মৃতের দেহ পোড়ায় পুলিশ।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি টুইটারে লিখেছেন- ‘ভারতের এক কন্যাকে ধর্ষণ করে খুন করা হলো। সমস্ত তথ্য চেপে দেওয়া হলও, এমনকি মেয়ের সৎকারের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হলো পরিবারের কাছ থেকে, যা অত্যন্ত অপমানজনক এবং অন্যায়পূর্ণ।’

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধি লিখেছেন- ‘হাথরস নির্যাতিতা যখন মারা যান, তখন ওর বাবার সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিল আমার। ফোনে ওর কান্না শুনেছিলাম। আমাকে বলছিলেন, উনি শুধু মেয়ের জন্য সুবিচার চান। গতকাল রাতে শেষবারের জন্য মেয়েকে বাড়িও নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। নিজে হাতে শেষকৃত্যও সম্পন্ন করতে পারেননি।’

গণধর্ষণের ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক দল নিন্দা করছেন। তবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অভিযোগ, এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে কিছু লোক রাজনৈতিক সুবিধা নিতে নেমে পড়েছেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন