আকাশে ঘুড়ির মেলা

  14-01-2017 08:53PM

পিএনএস: হাতে নাটাই, আকাশে রংবেরঙের ঘুড়ি। এমন দৃশ্য ছিল আজ শনিবার বিকেলে থেকে সন্ধ্যা অবধি রাজধানীর পুরান ঢাকার প্রতিটি বাড়ির ছাদে ও মাঠে। নারিন্দা, লক্ষ্মীবাজার, ফরিদাবাদ, ফরাশগঞ্জ,সূত্রাপুর, শাঁখারীবাজার, ডালপট্টিসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে উৎসবের আবহ ছড়িয়ে থাকলেও মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল ঐতিহ্যবাহী ফরাশগঞ্জের লাল কুঠির ছাদ।

প্রতিবছরই এ বাড়িতে ঢাকা কেন্দ্র ও ওল্ড ঢাকা কাইট ক্লাব যৌথভাবে করে থাকে পৌষ-সংক্রান্তি (সাকরাইন) উৎসব। চক্ষুদান, মালাদান, চারবুয়া, মাছলেঞ্জাসহ বিভিন্ন নামের ঘুড়িগুলো উড্ডয়নের সময় মানুষগুলো যেন খুঁজে নিচ্ছিল প্রাণদীপ্ত একটি বর্ণময় বিকেল। দর্শকদের মাঝে ফুটে ওঠে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। অসাধারণ এক উৎসব উপহার দেওয়ার অভিপ্রায়ে সন্ধ্যায় ঢাকাবাসী মেতে ওঠে একটু ভিন্ন আমেজে এবং ভিন্ন মেজাজে। নিরন্তর আতশবাজি ফুটিয়ে, ঢাক-ঢোল সহযোগে আকাশে অবিরাম ফানুস উড়িয়ে সন্ধ্যার আকাশে চলে আপন সৌন্দর্যে রাঙানো রুচি-অভিরুচির খেলা।

এ উপলক্ষে পুরান ঢাকার প্রতিটি বাড়িতে আয়োজন করা হয় নানা ধরনের মুখরোচক রান্না-বান্না। উৎসবের সঙ্গে রসনাবিলাস ভিন্ন এক আবহ তৈরি করে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের মাঝে। উৎসবের সব পর্ব শেষ করে একে অন্যের সঙ্গে কুশলবিনিময় করে ইতি ঘটে এ উৎসবের।
দীর্ঘদিন ধরে এ উৎসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন পুরান ঢাকার প্রবীণ ব্যবসায়ী হাজি আবদুল আলীম। এ উৎসবের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি এ উৎসবটি মোগল আমল থেকে হয়ে আসছে। বছরে নানা সময়ে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তবে তার অধিকাংশ অনুষ্ঠানই ধর্মকেন্দ্রিক তথা ব্যক্তিকেন্দ্রিক। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। মানুষ একই উদ্দেশে একই ছায়াতলে এসে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে। এই আনন্দ অব্যাহত রাখতে পারলে নিজেদের মধ্যে থাকা অহংকার, অহমিকা ও কালিমা দূর হবে বলে মনে করেন তিনি।

আবদুল আলীম আরো বলেন, মানুষে-মানুষে বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে। বেঁচে থাকা হবে আনন্দময়।


পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন