পিএনএস ডেস্ক: চীনের মানুষ মধ্য শরতে ‘মুন ফেস্টিভ্যাল’ উদযাপন করে। চলতি বছর ইউনান প্রদেশে মুন ফেস্টিভ্যালের রাতে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য চোখে পড়ল তাদের। মাঝ আকাশে হঠাৎ করে হাজির হলো এক ‘ফায়ারবল’ বা অগ্নিগোলক। গত ৪ অক্টোবর এই অগ্নিগোলক প্রত্যক্ষ করল কোটি কোটি মানুষ। এই ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটেও ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
স্থানীয় সময় রাত ৮টায় ধারণ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আগুনের ছোট্ট একটা বল আকাশ থেকে ভূমির দিকে ধেয়ে আসছে। আস্তে আস্তে আকার পরিবর্তন করে বিশাল থেকে বিশালাকার হতে লাগল আগুনের এই গোলা। এক পর্যায়ে আঁতশবাজির মতো বিস্ফোরিত হয়ে আকাশ আলোকিত করে ধরল, ঘন কালো অন্ধকারে দিয়াশলাইয়ের কাঁঠি জ্বালালে ঠিক যেমনটি হয়। অনেকে এই দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে যায়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আকাশে ‘ফায়ারবল’ দেখা যাবার এ ধরনের ঘটনা বিরল। এগুলোকে বোলাইডস বলা হয়। কিছু কিছু উল্কা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করার পর এই ঘটনা সৃষ্টি হয়। নাসার সেন্টার ফর নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডিস (সিএনইও) ১৯৮৮ সালের পর থেকে বেশ কয়েকটি ফায়ারবলের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে।
তারা বলেছেন, চীনে যে ফায়ারবলটি দেখা গেছে তার গতি ছিল সেকেন্ডে প্রায় ১৫ কিলোমিটার।
আর যখন বিস্ফোরিত হয় তখন এটি ৫৪০ টন টিএনটি পরিমাণ শক্তি উত্পাদন করেছিল। নাসা এযাবত ২০ টি ফায়ারবল নথিভুক্ত করেছে। তারা বলেছেন, ফায়ারবল পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনকও হতে পারে। ১৯০৮ সালে একটি ফায়ারবল সাইবেরিয়ার আকাশে বিস্ফোরিত হয়েছিল। তখন সেটি হিরোশিমায় আঘাত করা ২০০টি এটম বোমার শক্তি উত্পাদন করেছিল।
এতে মানুষের ক্ষতি না হলেও ৮০০ বর্গমাইল বনভূমি ধ্বংস হয়েছিল। আর ২০১৩ সালে রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্ক শহরের উপর ৫০০ কিলোটন শক্তি নিয়ে একটি ফায়ারবল বিস্ফোরিত হয়েছিল যাতে বহু ভবনে ফাটল ধরেছিল। আহত হয়েছিল সহস্রাধিক মানুষ। সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।
পিএনএস/আলআমীন
চীনের আকাশে রহস্যময় ‘ফায়ারবল’
14-10-2017 02:23PM