জঙ্গিমুক্ত আতিয়া মহল, জিয়া-মুসা ও মর্জিনার রহস্য কাটেনি

  28-03-2017 07:13AM

পিএনএস ডেস্ক: তিনদিনের সেনা কমান্ডোদের অভিযানে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি পাঠানপাড়াস্থ আতিয়া মহলে জঙ্গি মুক্ত হয়েছে। তবে রহস্য কাটেনি শীর্ষ জঙ্গি জিয়া, মুসা ও মর্জিনাকে নিয়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই আস্তানায় শীর্ষ জঙ্গি থাকার বিষয়ে আগেই ইঙ্গিত করেছিলেন।

কিন্তু কমান্ডো অভিযানে নিহত চার জঙ্গির পরিচয় জানা যায়নি। তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এদের মধ্যে কেউ শীর্ষ জঙ্গি জিয়া, মুসা ও মর্জিনা কী না তা জানা যায়নি।

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ব্রিগেডিয়ার ফখরুল আহসান বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে শীর্ষ কোনো জঙ্গি আছে কি না, এখনো নিশ্চিত করে আমি বলতে পারছি না। সেই আইডেন্টিফিকেশন প্রসেস চলবে। পুলিশ-র্যাব তাদের নমুনা সংগ্রহ করে নিশ্চিতভাবে বলবে। আমাদের কাছে তথ্য ছিল চারজনের বিষয়ে, সেই চারটি ডেড বডি আমরা পেয়েছি।’

আতিয়া মহলে জঙ্গি আছে, এমন সন্দেহে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পাঁচ তলা ওই ভবনটির নিচ তলার একটি ফ্ল্যাটে তালা দেয় পুলিশ। শুক্রবার সকালে ভবনের ভেতর থেকে বোমা বিস্ফোরণের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত হয়, ভেতরে জঙ্গিদের আস্তানা রয়েছে। সেদিন বিকেলে অভিযানে আসে বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াতের সদস্যরা।

এরপর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে আতিয়া মহলের ভেতরে শীর্ষ জঙ্গিরা অবস্থান করছে। শনিবার সকালে যখন সেনা বাহিনী অভিযান শুরু করে, তখন গুঞ্জনের ঢালপালা আরো মেলতে থাকে যে, আতিয়া মহলে নব্য জেএমবির নেতা মাঈনুল ইসলাম মুসা এবং শীর্ষ জঙ্গি মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক রয়েছে। ভেতরে থাকা কথিত মর্জিনা নামের মহিলা ছদ্মনামে রয়েছেন এবং তিনি আসলে মুসার স্ত্রী- এমন গুঞ্জনও ছড়াতে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত জিয়া, মুসা কিংবা মর্জিনাকে নিয়ে রহস্য থেকেই গেছে।

সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি পাঠানপাড়াস্থ আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানায় সেনা কমান্ডোদের অভিযানে গত রবিবার দুই জঙ্গি নিহত হয় বলে জানান সেনা সদর দপ্তরের সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান। ওই দুই জঙ্গির মধ্যে মুসা কিংবা জিয়া আছে কিনা, তা তিনি জানাতে পারেননি। সোমবার সন্ধ্যায় ফের প্রেস ব্রিফিং করা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। ফখরুল আহসান জানান, আতিয়া মহলে অভিযানে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। তন্মধ্যে তিন জন পুরুষ এবং একজন মহিলা।

নিহত এই চার জঙ্গির মধ্যে জিয়া বা মুসার লাশ রয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে পারেননি সেনা কর্মকর্তা কিংবা পুলিশ কর্মকর্তারা। আতিয়া মহলের ভেতরে দুই জঙ্গির লাশ রয়েছে। এছাড়া নিহত এক পুরুষ ও এক মহিলা জঙ্গির লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই পুরুষ জঙ্গির মধ্যে মুসা বা জিয়া আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি সেনা বা পুলিশ কোন পক্ষ থেকেই। ফলে আসলেই আতিয়া মহলে শীর্ষ জঙ্গি জিয়া বা নব্য জেএমবির নেতা মুসা ছিল কিনা, তা নিয়ে রহস্যই থেকে গেছে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে হস্তান্তর করা দুই জঙ্গির কারো পরিচয় সনাক্ত করা গেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএম রোকন উদ্দিন বলেন, এখনো আমরা সনাক্ত করতে পারিনি। সনাক্তের চেষ্টা চলছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন