‘জঙ্গিদের অর্থায়নে বিদেশিদের যোগসাজশ থাকতে পারে’

  30-04-2017 01:16AM

পিএনএস ডেস্ক: দেশে বর্তমানে জঙ্গি তৎপরতার অর্থায়নে বিদেশি সংস্থার যোগসাজশ থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কখনো কখনো দেখেছি জেএমবির কিছু কিছু সদস্য জাল মুদ্রা ব্যবসার সাথে জড়িত, সেই জাল মুদ্রাটি অন্য একটি বিশেষ দেশ থেকে আসে, ইন্ডিয়ান ফেইক কারেন্সি।’

তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে কোন কোন বিদেশি সংস্থার সম্পৃক্ততার বিষয়টি এসেছে এবং কখনো কখনো কোনো কোনো দেশের দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তা প্রত্যাহার করেও নেয়া হয়েছে, তাকে ফেরত পাঠানোও হয়েছে। এক্ষেত্রে কোথাও কোথাও তো কোন বিদেশি সংস্থার জড়িত থাকার কথা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাবে না।’

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযান যেমনটি বেড়েছে তেমনি বেড়েছে পুলিশের ভাষায় সাফল্যের হারও।

গত বছর জুলাই মাসে ঢাকার হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্যে দিয়ে দেশে নতুন করে সহিংস জঙ্গিবাদের যে উত্থান দেখেছে, সেই ঘটনার পর কিন্তু জঙ্গিদের দ্বারা খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হবার নজির দেখা যায়নি, যতটা জঙ্গিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুলিশের দ্বারা।

এমনকি বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে শেষ হওয়া পুলিশের একটি অভিযানে চারজন অভিযুক্ত জঙ্গি নিহত হয়েছে।

কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে পুলিশের ভাষায় 'নব্য জেএমবি' নামে যে গ্রুপটি বাংলাদেশে সক্রিয় রয়েছে, তারা বেশ আঁটসাঁট বেঁধেই মাঠে নেমেছে। কিন্তু এ জন্য অর্থ আসছে কোথা থেকে?

মনিরুল ইসলাম বলছেন, ‘এখন পর্যন্ত অর্থের সকল উৎসকে আমরা চিহ্নিত করতে পারিনি।’

সম্প্রতি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সন্ত্রাসবাদে বিদেশি অর্থ সংস্থানের উৎসগুলো চিহ্নিত করবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে বলে জানা যাচ্ছে।

তবে জঙ্গি বিষয়ে গবেষক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক নুর খান লিটন বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিদেশি সংস্থা জড়িত এমন কথা বলার সময় এখনো আসেনি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে এরকম বড় ধরনের তথ্য বা প্রমাণ নেই। তবে যেটা এসেছে, সেটা হল স্ব-উদ্যোগে কোন কোন বিদেশি এ ধরণের ঘটনায় অর্থ সাহায্য করেছেন।’

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই জঙ্গিরা কিভাবে চলে?
পুলিশ বলছে, মূলত দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত জঙ্গিরাই হিজরত অর্থাৎ সংগঠনে যোগদানের উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়ার আগে তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি জঙ্গি সংগঠনের জন্য দান করে দিচ্ছেন।

কিন্তু নূর খান লিটনের বক্তব্য, বাংলাদেশে যে কায়দায় জঙ্গিরা তাদের তৎপরতা চালাচ্ছে, তাতে তাদের খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় বলে তিনি মনে করেন না।

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের তৎপরতা চালাতে যে অর্থ প্রয়োজন তা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকেই মেটানো সম্ভব এবং এখনও পর্যন্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমন নজিরই দেখা গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, জঙ্গিদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং থাকা খাওয়ার যে ব্যয় তা তাদের সদস্যরাই যোগান দিচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে তাদের অর্থায়ন হচ্ছে বাইরে থেকে।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন