গণমাধ্যমে ভীতির ফলেই সমাজে দুর্নীতি বেড়েছে

  17-10-2017 06:27PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : গণমাধ্যমজুড়ে নানা রকম ভীতি কাজ করছে। আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারার ব্যাপক প্রয়োগ এর অন্যতম কারণ। এর বাইরে সম্প্রচার আইনের ১৯ ধারা লঙ্ঘন করলে অনধিক সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।

উল্লিখিত দুটি ধারা এবং গণমাধ্যমবিরোধী কালাকানুন বহাল থাকায় লিখতে গিয়ে সাংবাদিকরা শঙ্কিত থাকেন। ভয়-ভীতির পাশাপাশি এবং হাল আমলে সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় তাদের শঙ্কা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে।

ভীতিকর অবস্থা বিরাজমান থাকায় অকাট্য প্রমাণ ও বাস্তবতা থাকার পরও অনেক সাংবাদিক সঠিক তথ্য উপস্থাপনের সাহস পান না। সঠিক তথ্য গণমাধ্যমে না আসায় দেশ ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্নীতি ও শোসনমুক্ত সমাজের যা অন্তরায়।

সঠিক চিত্র জনমানুষের সামনে না আসায় অপরাধ প্রবণতা সমাজকে গ্রাস করছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে সমাজের চলমান বাস্তবতা নিয়মিত তুলে ধরা হলে সমাজ এতটা অধঃপতনে যেত না। আর দুর্নীতিও দেশে আশঙ্কাজনক হারে এতটা বাড়ত না।

দুর্নীতি কতটা সমাজকে পেয়ে বসেছে, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আনীত ১১টি অভিযোগ এর বড় প্রমাণ। ঘটনা সত্য না অসত্য- সেদিকে না গিয়ে অভিযোগটির স্থান দুটির অবস্থান চিন্তা করলে দুর্নীতির সার্বজনিন একটা চেহারা বেরিয়ে আসে বৈকি।

এমনটা একদিনে হয়নি। এটা মাছের মাথায় পচন ধরনের অবস্থা। দেশের রাষ্ট্রপতির মুখ থেকে প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে এটা বেরিয়ে আসা মানে অন্যরা ধোয়া তুলসি পাতা যে নন, সেটা সহজে অনুমেয়। দেশ ও সমাজের অন্যত্র কী ঘটছে, সচেতন জনগোষ্ঠীর কাছে এ থেকে তা স্পষ্ট।

দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়, শেয়ারবাজারে ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীর অর্থ লুট, ব্যাংক লুটের মচ্চব চলা, সর্বশেষ রাষ্ট্রীয় কোষাগার লুট একদিনে হয়নি। একটা আরেকটার ধারাবাহিকতা। রেশ টেনে না ধরার কুফল।

বিষয়গুলো যদি সময়মতো গণমাধ্যমে আসত, তাহলে এর একটা প্রতিকার হতো। ঘটনার পেছনের নায়কদের শাস্তি হতো। অন্যায় করলে যে শাস্তি হয়, সে ভয়টা সৃষ্টি হতো। গণমাধ্যম স্বাধীন ও ভীতিমুক্ত হলে অপরাধের পরিধি অনেক কমত। সমাজকে কলুষমুক্ত করতে হলে গণমাধ্যমকে ভীতিমুক্ত করা সময়ের দাবি।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন