‘সরকারের চেয়েও শক্তিশালী ভূমি দস্যুরা’

  22-01-2018 02:10AM



পিএনএস ডেস্ক: ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ২০০০ সালের আইনে বলা হয়েছে নিম্নাঞ্চল ভরাট করা যাবে না কিন্তু কেউ মানছে না। মাঝে মাঝে মনে হয় ভূমি দস্যুরা আমাদের (সরকার) চেয়েও অনেক শক্তিশালী। গৃহায়ণ মন্ত্রী বলেন, তবে যারা নিম্নাঞ্চল ভরাট করেছে তাদের কেউ ছাড় পাবে না, এদের সবাইকে ধরা হবে। আমি বিশ্বাস করি সরকারের নীতি শক্তিশালী হলে তারা কোনো দিনও পারবে না।

আজ সোমবার রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনিটির সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম। পরিচালনা করেন ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ। গৃহায়ণ মন্ত্রী বলেন, ১০/১৫ বছর আগে আশুলিয়ায় রাস্তার ধারেই প্রচুর পানি দেখা যেত। এখন আর দেখা যায় না। বাইরে থেকে বালু এনে ভরাট করে ফেলা হয়েছে প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর এ এলাকাটি। সরকার আশুলিয়ার জমি অধিগ্রহণ করে আবাসিক এলাকা করবে। এখানকার মোট ভূমির দুই তৃতীয়াংশে পানি সংরক্ষণ করা হবে এবং গড়া হবে দৃষ্টিনন্দন করে। এখানে বনভূমির পরিমাণ হয়তো কম থাকবে। এটা হবে ঢাকার মধ্যে আরেকাট সুন্দর লোকেশন।

মন্ত্রী বলেন, তুরাগের এখন আর কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। বালু দিয়ে তুরাগ ভরাট করে ফেলেছে। বালু নদীর পানি দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়েছে। ভূমি দস্যুরা রাজধানীর আশেপাশের নিম্নাঞ্চল ভরাট করে ফেলছে, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রথমত: জনসচেতনতা প্রয়োজন। আইন যা আছে এর পুরোটাই প্রয়োগ করতে হবে। আমার মন্ত্রণালয়ের লোকদেরও সততার অভাব আছে। রাজউকের ভেতরেই ভুত রয়েছে যে কারণে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, সরকারি জায়গা আমরা কাউকে দিচ্ছি না। অতীতের সরকারগুলো সরকারি জায়গা বিভিন্ন নামে বরাদ্দ নিয়ে নিয়েছে। আমরা যেখানে সরকারি জায়গা পাচ্ছি সেখানে বহুতল ভবন তৈরি করছি। এতে ছোট জায়গায় অধিক মানুষকে জায়গা দিতে পারছি। উদাহরণ হিসেবে তিনি মোহাম্মদপুর ও লালমাটিয়ায় সরকারি জমিতে জীর্ণ ভবনের উল্লেখ করেন। সেখানে দুইতলা ভবনগুলো ভেঙে বহুতল করে আরো অধিক মানুষের আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

পরিকল্পিত উপ-শহর পূর্বাচলের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, এ বছরই পূর্বাচল হয়ে যাবে। সেখানে খুটির সাহায্যে আপাতত: বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ লাইন চলে যাবে মাটির নিচে। পিপিপির মাধ্যমে সেখানে স্যুয়ারেজ, পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট করা হবে। এটা এমনভাবে করা হয়েছে যে মানুষের প্রয়োজনের সবকিছুই হাতের কাছে পাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, থাকবে। মন্ত্রী বলেন, বস্তিবাসীদের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫৫০টি ফ্ল্যাট করা হচ্ছে। এখানে দরিদ্ররা কম ভাড়া দিয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ১০ হাজার ফ্ল্যাট করা হবে।

তেজগাঁয়ের মিডিয়া পল্লী সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আগের সরকার ব্যক্তি মালিকানায় সরকারি জমি বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছে। আমরা সেখানকার সরকারি জমিতে বহুতল গড়ে তুলব। তিনি উত্তরা এপার্টমেন্টের উল্লেখ করে বলেন, আমরা কিস্তির মাধ্যমে এপার্টমেন্টগুলো দিচ্ছি। প্রথম আট বছরে অর্ধেক টাকা দিতে হবে এবং পরের ১৬ বছরে অবশিষ্ট টাকা দেয়া যাবে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন