দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় ৪ বাংলাদেশি, নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি

  29-03-2024 03:36PM



পিএনএস ডেস্ক: ভালো চাকরির প্রলোভনে গিয়েছিলেন লিবিয়া। কিন্তু সেখানে গিয়ে চাকরি তো দূরের কথা, দালালের খপ্পড়ে পড়ে অপহরণের শিকার হন চট্টগ্রামের চার যুবক। চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। সেই ভিডিও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ।

লিবিয়ার এক বন্দিশালায় অমানুষিক নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি যুবক মোহাম্মদ ওয়াসিম। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের আনোয়ারার গহিরা থেকে জীবিকার তাগিদে অন্য তিন বন্ধুর সাথে লিবিয়া যান ওয়াসিম। কিন্তু সেখানে গিয়ে পড়েন দালালের খপ্পড়ে। আটকে রেখে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে চাওয়া হয় ১০ লাখ টাকার মুক্তিপণ। তবে বুধবার জিম্মি দশা থেকে পালিয়ে যান ওয়াসিম। এরপরই কথা বলেন পরিবারের সাথে। স্বজনরা জানান, অপহরণকারীরা সবাই বাংলাদেশি। যাদের একজন মিজানুর রহমান। দেশে তার বাড়ি জয়পুরহাটের কাশিরা আক্কেলপুর তেমরিয়ায়।

ওয়াসিমের মামা মোহাম্মদ নাসির বলেন, মিজানুর রহমান প্রথমে চাকরি দিবে বলে এসে পাসপোর্ট নিয়ে যায়। এরপর ২দিন পর এসে একটি গাড়িতে করে তাদের নিয়ে যায়।

ওয়াসিমের মতোই অপহরণের শিকার বোরহান উদ্দিন। তার বাড়ি রায়পুরে। সন্তানকে ফিরে পেতে আহাজারি থামছে না মা শামসুন নাহারের। তাদের কাছে একটি অডিও বার্তা পাঠান বোরহান। যেখানে নির্মম নির্যাতনের কথা তুলে ধরে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলেন তিনিও।

বোরহানের ভাই মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, কয়েক মিনিট পরপর কল দিচ্ছে অপহরণকারীরা। তখন তারা বলে দশ লাখ টাকা দাও। তা না হলে মারবো। তখন আমাদেরকে ভিডিও কলে দেখায় যে তারা যে ভাইকে মারতেছে তা দেখায়।

এদিকে একি অবস্থা নাইমূল ইসলাম ও জাবেদুর রহিমের বাড়িতেও। স্বজনদের দাবি, জনপ্রতি চার লাখ টাকার বিনিময়ে চারজনকেই লিবিয়া নিয়ে যান সেখানে ৪০ বছর ধরে বসবাসরত জহিরুল ইসলাম।

নাইমূল ইসলামের ভাই হেলাল উদ্দিন বলেন, ভাইকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম ধারদেনা করে। এখনতো আমাদের কাছে ১০ লাখ টাকা তো দূরের কথা। নিজেদের চলার সামর্থ্যও নেই।

তবে লিবিয়া নিয়ে গেলেও অপহরণের সাথে জহিরুল জড়িত নয় বলে দাবি তার স্বজনদের। জহিরুল ইসলামের ভাবী রোজিনা আখতার বলেন, জহিরুল কিছু জানে না। সেখানে মেডিকেলে চাকরির জন্য ঠিকানা দিছে। সেই চাকরির জন্য তারা ওখানে গেছে। এরপর তো আর কিছু সে জানে না।

বন্দি এসব তরুণকে উদ্ধারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইশতিয়াক ইমন বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের থেকে আমরা আবেদন পেয়েছি। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অবগত করা হবে। যেনো অপরাধীদের ধরা যায় এবং যাদের পাচার করা হয়েছে তাদের যেনো দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি।

স্বজনদের তথ্য মতে,এই চারজনকে প্রথমে টুরিস্ট ভিসায় দুবাই নেয়া হয়। পরে মিসর হয়ে নেয়া হয় লিবিয়ায়।


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন