‘খালেদার সাজা হলেই নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি’

  01-03-2017 02:32AM

পিএনএস : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলার রায়ে সাজা হলেই তার দল দুই-তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। যে বিশ্ব ব্যাংক মিথ্যা অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু থেকে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই বিশ্ব ব্যাংকই এখন বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসছে।

২০১৮ সালের শেষার্ধ্বে বা ২০১৯ সালের প্রথমে যথাযথে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি যতই ধূম্রজাল সৃষ্টি করার চেষ্টা করুক না কেন! তারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আগামী নির্বাচনে সংবিধান সম্মতভাবে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই সরকারের বিএনপির অংশগ্রহণের কোন সুযোগ নেই। কারণ তারা সংসদের প্রতিনিধিত্বকারী না।

সরকার অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে দাবি করে তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলার নিষ্পত্তি চূড়ান্তের পথে। এই মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হবে। মওদুদ সাহেব; নিশ্চয়ই বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছেন। এজন্য তিনি বলছেন, খালেদা জিয়া সাজা হলেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।

‘খালেদা জিয়ার ভাগ্যে কি আছে? আমরা জানি না। তা আদালত নির্ধারণ করবে। তবে এটা নিশ্চিত খালেদা জিয়ার সাজা হলেই বিএনপি দুই-তিন ভাগে বিভক্ত হবে এবং তাদের সকল ভাগেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা আজকে বিশ্বসভায় জননন্দিত নেত্রী। কিন্তু আমাদের সমস্ত অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে, একশ্রেণীর চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু, চর, নদী, খাল দখলকারী কুলাঙ্গাররা। এরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের ছায়াতলে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে। এরাই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু।

তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার কেউ সমালোচনা করে না। আমরাই সর্বাত্মক সমালোচিত হই। মানুষ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যেই শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় দেখতে চায়। নেত্রীর প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস শতভাগ আছে। কিন্তু আমাদের অনেকের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য, আমাদের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের জন্য আমরা আমরা এই আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছি।

দলীয় ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের প্রতি আহ্বান অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে দোষ ক্রটি সংশোধন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামীতে আমাদেরকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্যে আমাদেরকে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতেই হবে। এছাড়া কোন বিকল্প পথ নেই।

সরকারের বিভিন্ন জনমুখী কর্মসূচির উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিকে ডাটাবেজের আওতায় নিয়ে এসেছি। এখন থেকে যে কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সুবিধাভোগী এবং ডিলারদের তালিকা দেখতে পাবে। আগামীকাল ১ মার্চ থেকে আবার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। আশা করছি নতুন তালিকা অনুযায়ী প্রায় শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত এই কর্মসূচি চালু করতে পারব। এই কর্মসূচিকে আমরা বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে চাই। কারণ এই কর্মসূচি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত এবং অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে।

একই সঙ্গে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র করার জন্য ড. ইউনূসসহ সকল ষড়যন্ত্রকারীর মুখোশ উন্মোচন এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য সরকারের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনায় আরো অংশ নেন রমেশচন্দ্র সেন, মঈন উদ্দীন খান বাদল, ইয়াসিন আলী, মীর শওকত আলী বাদশা, বেগম মনোয়ারা বেগম, বেগম আখতার জাহান, বেগম রহিমা আখতার, বেগম সাবিহা নাহার বেগম প্রমুখ।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন