‘পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচারও করতে হবে’

  26-03-2017 02:45AM

পিএনএস ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, গণহত্যা দিবস আইনি কাঠামোর মধ্যে এসেছে। এখন আমাদের কাজ হবে আমাদের লেখায়, আমাদের বলায়, আমাদের আলোচনায়, আমাদের প্রত্যেকটি জায়গায় দেশে-বিদেশে গণহত্যার বিষয়টি তুলে ধরা। এ ব্যাপারে তিনি লেখক, গবেষক এবং গণমাধ্যমকেও ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে এবং যারা নির্মম ও পাশবিক কাজটি করেছিল সেই ঘাতকদের বিরুদ্ধাচরণ ও ঘৃণা জানাতে এ দিবসটি পালনের কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা কখনো বাংলাদেশকে মেনে নেয়নি, মানবেও না। পাকিস্তানিরা শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষকে অন্ধকারে রেখে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের পাশাপাশি যেসব পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধ করেছে তাদেরও বিচার করতে হবে।

তিনি গণহত্যা দিবসটি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের জন্যও কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে এটি পালনের জন্য জাতীয় সংসদ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, এটি এখন আইন হয়ে গেছে। পাশাপাশি আমাদের বাঙালি যারা বিভিন্ন দেশে আছে তাদের কাছে এ খবরটি পৌঁছে দিয়ে এটিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থন আদায় করতে বলতে হবে।

শনিবার গাজীপুরস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে আয়োজিত ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইচ টি ইমাম এ কথা বলেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে সভায় আলোচনা করেন দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল হোসেন।

সভাপতির ভাষণে প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, পাকিস্তানিদের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের হাত থেকে দুই-তিন বছরের শিশু থেকে ৭০-ঊর্ধ্ব বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ ও ধর্মাশ্রয়ী কেউই রেহাই পায়নি। নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতনে জন্ম নিয়েছিল যুদ্ধশিশু। মাত্র ৯ মাসের সময় ব্যবধানে যত লোককে হত্যা ও গৃহছাড়া করা হয়, তা নজিরবিহীন। বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের ৭১-এর গণহত্যা ছিল সমসাময়িককালের কম্বোডিয়া, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, রুয়ান্ডা, সুদানের দারফুর ইত্যাদি হত্যাকাণ্ডের চেয়েও অধিকতর বেশিমাত্রার ও নিষ্ঠুর। পাকিস্তানি বাহিনীর কিছু সংখ্যক স্থানীয় দোসর ছাড়া এরূপ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা সম্ভব হতো না। এত বড় হত্যাকাণ্ড কিছুতেই বিনা বিচারে যেতে পারে না। তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অনুষ্ঠান বর্তমান সরকারের একটি সময়োচিত পদক্ষেপ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. মো: আসলাম ভূঁইয়া ও ড. হাফিজ মুহাম্মদ হাসান বাবু এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নোমান উর রশীদ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শুরুর আগে ২৫ মার্চ ও তৎপরবর্তী গণহত্যার ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয় এবং শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা ৩০ লাখ শহীদের স্মরণে ক্যাম্পাসে ৩০টি গাছের চারা রোপণ করেন।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন