আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান চলছে: হানিফ

  23-07-2017 09:36AM


পিএনএস ডেস্ক: অতি উৎসাহী নেতাদের নিয়ে বিব্রত আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। সর্বশেষ বরগুনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করায় বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে সাময়িকভাবে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

গত মে মাস থেকেই শুদ্ধি অভিযান চলছে আওয়ামী লীগে। প্রত্যেকটি জেলা কমিটির কাছে চিঠি পাঠিয়ে দলে অনুপ্রবেশকারী নেতাদের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা এটা দেখভাল করছেন। তবে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রে কোন তালিকা আসেনি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আমরা শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছি। কারণ এসব অতিউৎসাহী নেতাদের কারণে দল অনেক সময় বিব্রত অবস্থায় পড়ে। সর্বশেষ, আমরা বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করেছি। জেলাগুলো থেকে তালিকা আসার পর অনুপ্রবেশকারী নেতা ও অতিউৎসাহী এবং যাদের কারণে দল অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

এই অতিউৎসাহী নেতাদের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। গত শুক্রবার গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় অংশ নিতে যাওয়া নেতারা ইউএনও গাজী তারিক সালমনের প্রসঙ্গ তোলেন। এ সময় মামলার বাদী অ্যাডভোকেট সাজু সম্পর্কে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে থাকা নেতাদের বলেন, ‘তার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিন।'

বঙ্গবন্ধুর আলোচিত ছবিটি দেখে প্রধানমন্ত্রী বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘ক্লাস ফাইভের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এই কর্মকর্তা সুন্দর একটি কাজ করেছেন এবং সেখানে যে ছবিটি আঁকা হয়েছে, তাতে বিকৃত করার মতো কিছু করা হয়নি। ছবিটি রীতিমতো পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য। এই কর্মকর্তাও পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য।'

এদিকে, বরিশালের যে ঘটনা নিয়ে এত আলোচনা সেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজী তারিক সালমন শনিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বরিশালের আগৈলঝাড়ার ইউএনও থাকাকালে কয়েকটি কঠোর প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কারণে ‘নাখোশ মহল বিশেষের ইন্ধনে' তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে ছবি দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্র তিনি ছাপিয়েছেন সেটা বিকৃত ছবি। বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ওবায়েদ উল্লাহ সাজু এই মামলার বাদী। গত বুধবার এ মামলায় বরিশাল মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আবেদন নাকচ করে তাকে হাজতে পাঠানো হয়। দু'ঘণ্টা পর আবার জামিন দেন একই বিচারক।

অন্যদিকে, এই বিচারক নিজেই সার্কিট হাউজে সাত মাস থাকার পরও ভাড়া পরিশোধ করেননি। টাকা পরিশোধের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিচারককে চিঠি পাঠানো হলেও তিনি ইতিবাচক সাড়া দেননি। জেলা প্রশাসক ড. গাজী সাইফুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, চীফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক আলী হোসাইন সাত মাস সার্কিট হাউসে বাস করেছেন। এর মধ্যে ভাড়া দিয়েছেন কেবল পাঁচ দিনের। তিনি দীর্ঘদিন এখানে বাস করায় তার কাছে ৯৩ হাজার টাকা ভাড়া বকেয়া পড়ে। এর জন্য তাকে চিঠিও দেয়া হয়েছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘একটা দল অনেক দিন ক্ষমতায় থাকলে তাদের মধ্যে অতিউৎসাহী বা চাটুকর তৈরি হতে পারে। কিন্তু আশঙ্কার কথা হল স্থানীয় পর্যায়ের নেতারাও প্রশাসনে কি পরিমান ভূমিকা রাখছেন। কারণ একজন ইউএনও'র বিরুদ্ধে মামলা হল আর বিচারক তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলেন। এটা কোন কথা হতে পারে না। মামলা হলেইতো একজন অপরাধী হয়ে যেতে পারেন না। এরতো তদন্ত হতে হবে।' সূত্র: ডয়চে ভেলে

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন