সরকার দেশে সহিংসতার পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে : ফখরুল

  18-08-2017 03:16PM

পিএনএস : সরকার ইচ্ছে করেই দেশে সহিংসতার পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে সরকারদলীয় মন্ত্রী এমপিদের বক্তব্য নজিরবিহীন। সরকার এখন ইচ্ছে করেই সহিংতার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে।’

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এনডিপি’র উদ্যোগে জননেতা আনোয়ার জাহিদের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে “বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সহায়ক সরকারের কোন বিকল্প নেই” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর সরকার বিচার বিভাগকে প্রকাশ্যে করায়াত্ব করার চেষ্টা করছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় যখন আসে, যে কোনও রাজনৈতিক দলের বিপক্ষে গেলে তারা সংক্ষুব্ধ হতে পারে। কিন্তু সরকারের মন্ত্রীরা যে ভাষায় কথা বলছেন তা ইতিহাসে নজিরবিহীন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার সারাদেশের মানুষকে জানিয়ে জোর করে রায় নিজেদের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করছে। তাই এখন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বেআইনিভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে এখন রাষ্ট্রের উপর হাত দিয়েছে। রাষ্ট্রের ভিত্তি এক এক করে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি খায়রুল হকের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে, বাংলাদেশের সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে তিনি জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। অবিলম্বে আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি। এবং তার বিচার হওয়া উচিত।

নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টির কাজ করবে না- সিইসির এমন বক্তব্যের সমালোচনাও করেন ফখরুল।তিনি বলেন, আইনে কি আছে সেটা নয় বাস্তবতাটাকে দেখতে হবে।এদেশে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো রকিব মার্কা নির্বাচন আর হতে দেয়া হবে না। জনগণ করতে দেবে না। সংলাপ ও আলোচনা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা’র সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা'র সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জাতীয় দল চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, এলডিপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, বিএনপি নেতা ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্বারী আবু তাহের, মো. মুছা, মো. মনিরুজ্জামান মনির, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সামসুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব রাজু আহম্মেদ প্রমুখ।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আনোয়ার জাহিদ ছিলেন সাহসী নেতা। তিনি যা বিশ্বাস করছে সাহসীকতার সাথে তা বলতেন। কখনো কোন ভয় তাকে তার বিশ্বাস থেকে বিচ্যুত করতে পারে নাই। জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে আজীবন ধারণ করেছেন। লড়াই করেছেন জাতীয় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায়।

বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র আজ চরম সংকটের মুখোমুখি। সরকারী দলের অসহিষ্ঞু আচরনের কারণে সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মুখে। সর্বশেষ ষোড়শ সংশোধানী নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর সরকারের কর্তাব্যাক্তি আর সরকারী দলের নেতাদের একের পর এক মন্তব্য রাষ্ট্রকে গণতন্ত্রহীনতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা জননেতা আনোয়ার জাহিদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে সরকার ও সরকারি দলের সমালোচনা থাকলে তারা নিশ্চয় তা ব্যক্ত করতে পারেন। তা না করে তারা যে যুদ্ধাংদেহি মনোভাব নিয়ে উচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন তা বাংলাদেশে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার মূলে কুঠারাঘাতের সামিল হিসেবে গণ্য হবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন