‘সংবিধানে প্রধান বিচারপতির পদ একদিনের জন্যও শূন্য থাকার সুযোগ নেই’

  19-11-2017 06:59PM

পিএনএস ডেস্ক: সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির পদ একদিনের জন্যও শুন্য থাকার সুযোগ নাই, বিচারপতিদের উপর চাপ বজায় রাখার জন্যই প্রধান বিচারপতি নিয়োগে বিলম্ব করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।

রবিবার বিকেলে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে যা বলে তা বিশ্বাস করে না, তারা মুখে বলে এক কথা আর কাজে আরেক।

মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গত শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়া যদি সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারেন, তাহলে শেখ হাসিনা কেন পারবেন না। খালেদা জিয়া যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, শেখ হাসিনার তা করা উচিত হবে।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তো বর্তমান সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি। তারা চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে পারেন।’

মওদুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি এতোই জনপ্রিয় হয়, মানুষ আবারো তাদেরকে ভোট দিতে অপেক্ষা করছে, তাহলে একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। যাতে আমার ভোট আমি দিবো, যাকে খুশি তাকে দিবো এ অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারেন। তাহলে আমি অভিনন্দন জানাবো যদি আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করে আবার নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে। দেশের মানুষও আওয়ামী লীগকে স্মরণ করবে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে- এটা আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ আওয়ামী লীগ মুখে যা বলে তা বিশ্বাস করে না। এছাড়া বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দল আরেক রাজনৈতিক দলকে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ যেমন বিএনপিকে ৯৬ সালে বিশ্বাস করেনি। তখন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল।

দেশে আর কোনো একদলীয় নির্বাচন হতে দেয়া হবে না মন্তব্য করে মওদুদ আহমদ বলেন, আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। খালেদা জিয়া হবেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান সরকার যেসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড করছে দেশের মানুষ এর জবাব দেবে আগামী নির্বাচনে।

তিনি বলেন, আমরা এখনো অপেক্ষা করছি সমঝোতার মাধ্যমে রাজনৈতিক সভ্যতা ও গণতন্ত্র ফিরে আসুক। যাতে করে দেশের মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পায়।

আওয়ামী লীগ কোনো দিনই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, তারা মুখে বলে এক কথা আর কাজ করে ভিন্ন। তারাই অতীতে রক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে দেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়েছে। তাদের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় দেশে দুর্ভিক্ষও হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় আজো আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনায় এসে দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিচ্ছে।

দেশের রাজনীতিবিদদের এখন কোনো আদর্শ নেই দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘রাজনীতিতে বিশ্বাস নেই। সরকার বিশ্বাস করে না বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিশ্বাস করে না সরকারকে। তাই একে অপরের প্রতি সেই বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হবে। রাজনৈতিক মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় যে যত কথাই বলুক না কেন, শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন শুধুমাত্র নামে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তাও চলবে না।’

মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, মজলুম ভাসানী ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি, তিনি রাজনীতি করেছেন নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়। তিনি আন্দোলন করেছেন যে সরকার সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছে তার বিরুদ্ধে।

ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, কৃষকদল নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।

পিএনএস/কামাল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন