বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে অনাহুত বিতর্কের ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে: কাদের

  28-11-2020 02:54PM

পিএনএস ডেস্ক:বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী যে অনাহুত বিতর্কের সৃষ্টি করছে তার ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভাস্কর্য নিয়ে মনগড়া ব্যাখ্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশের সংস্কৃতির প্রতি চ্যালেঞ্জ। দেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংবিধান এবং রাষ্ট্রবিরোধী যে কোনও বক্তব্য বরদাশত করা হবে না। ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে এনে ধর্মীয় সহনশীলতা বিনষ্টের যে কোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে। সরকারের সরলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। জনগণের শান্তি বিনষ্টের কোনো অপচেষ্টা করলে জনগণই রুখে দাঁড়াবে।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মপ্রিয় মানুষের মনে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এদেশে ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা, চর্চা এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে মাদ্রাসা বোর্ড পুনর্গঠনসহ ইসলাম প্রচারে তাবলিগ জামাতকে জমি প্রদান করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পবিত্র ধর্মের একজন নিবেদিত প্রাণ ও অনুসারী হিসেবে ইসলামের সঙ্গে জ্ঞানবিজ্ঞানের সমন্বয় করে প্রকৃত ইসলামের চর্চা এগিয়ে নিতে জনমানুষের ধর্মানুরাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশের প্রতিটি উপজেলায় নির্মাণ করেছেন মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স।

তিনি বলেন, একজন ধর্মপ্রাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্বে তখন এদেশে ইসলামবিরোধী কোনো কার্যক্রম হবে, তা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভাস্কর্যকে যারা মূর্তি বলে অপপ্রচারে নেমেছে তারা নিজেরাই ভ্রান্তিতে আছে। দেশের আলেম সমাজ এবং বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যেই বারবার বলেছেন, মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়।

সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ইসলাম আমাদের ধর্ম। এ ধর্মের বিধিবিধানে ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ির সুযোগ নেই। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে ধর্মীয় বিষয়ে বিতর্ক করতে, নিষেধ করা হয়েছে ফিতনা - ফ্যাসাদ সৃষ্টিতে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্থপতির ভাস্কর্য টেনে হিঁচড়ে নামাবে বলে কোনো কোনো ধর্মীয় নেতা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রাখছেন। তাদের এমন রুচি এবং ভাষা ব্যবহার দেখে তাদের ধর্মচর্চা ও ইসলামি রুচিবোধ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পবিত্র কোরআনের সূরা সাবা’র ১৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত ‘তামাসিলা’ এবং সূরা ইব্রাহিমের ৩৫ নম্বর আয়াতে বর্ণিত ‘আসনাম’ শব্দ দু’টি এক নয়। কাজেই মুফাসসসিরগণ মনে করেন তামাসিলা মানে ভাস্কর্য আর আসনাম মানে প্রতিমা পূজা। এ দু’টি শব্দকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

প্রকৃত ইসলাম চর্চার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে সবাই বিরত থাকি। ধর্মকে রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যবহার না করারও আহ্বান জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, সরকারপ্রধান আগেই বলেছেন, দেশে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন হবে না। তাই অন্য কোনো পথ না পেয়ে ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে এনে ধর্মীয় সহনশীলতা বিনষ্টের যে কোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন