গাইবান্ধায় মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলা আসর

  23-03-2017 11:17PM

পিএনএস,গাইবান্ধা : গাইবান্ধা পৌরপার্কে স্বাধীনতার বিজয় স্তম্ভে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী ‘চলো ফিরে যাই ৭১ এ’শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলার আসর অনুষ্ঠিত হয়। ৭১ এ পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন দিবস স্মরণে গাইবান্ধার শিশু কিশোরদের সংগঠন আমরা ‘ক’জন অগ্রদূত এই গল্প বলা আসরের আয়োজন করে।

এতে বক্তব্য রাখেন গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন গল্প বলা আসরের উদ্বোধন করেন। এই আসরে ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলেন এ জেলার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা শাহ শরিফুল ইসলাম বাবলু, গৌতম চন্দ্র মোদক, মাহমুদুল হক শাহজাদা, নাজমুল আরেফিন তারেক, ওয়াশিকার ইকবাল মাজু, মবিনুল হক জুবেল, শামছুল আলম। এছাড়া শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের মধ্যে শহীদ মধুর বড় ভাই মঞ্জু, শহীদ প্রভাত চক্রবর্ত্তীর স্ত্রী মুক্তা রানী চক্রবর্ত্তীসহ অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র জিএম চৌধুরী মিঠু, তানজিমুল ইসলাম পিটার প্রমুখ।

মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত শিশুদের প্রশ্নের উত্তরে তাদের গল্প বলায় উল্লেখ করেন, ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ কেন? সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা কিভাবে বেঁচে গেলেন? কিভাবে শত্র“দের আক্রমণ মোকাবেলা করলেন? তদুপরি তারা নতুন প্রজন্মের কাছে পাকবাহিনীর অত্যাচার ও নির্মম নির্যাতনের বিভীষিকাময় চিত্র তুলে ধরেন। গল্পে গল্পে তারা শিশুদের সামনে মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনার বর্ণনা দেন এবং বলেন, কিভাবে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের জন্যই সেদিন ৭১ এ যুদ্ধ করেছেন। তারা আরও বলেন, নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও পাকবাহিনীর বন্দুকের সামনে দাঁড়াতে ভয় পায়নি মুক্তিযোদ্ধারা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ৭১’র ২৩ মার্চের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই উত্তাল দিনে গাইবান্ধা জেলার শহরের পাবলিক লাইব্রেরী সংলগ্ন তৎকালিন টেনিস কোর্টে সর্বপ্রথম পাকিস্তানি পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে পুড়িয়ে দিয়ে ম্যাপ অংকৃত লাল সবুজ রংয়ের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক রেসকোর্স মাঠে দেয়া ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়েই কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এবং আওয়ামী লীগের তৎকালিন নেতৃবৃন্দ এই প্রতিরোধ দিবসে পাকিস্তানি পতাকা পুড়িয়ে দেয়।

এতে উদ্বুদ্ধ হয়েই জেলা শহরের নতুন বাজারে কর্মরত একজন স্বল্প শিক্ষিত দর্জি প্রয়াত বেলাল শেখ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেসময় লাল সবুজের মাঝখানে বাংলাদেশের ম্যাপ অংকৃত স্বাধীনতার পতাকা নির্মাণ করেন। যে পতাকাটি ওখানে উত্তোলন করা হয়েছিল। ৭১’র ওইদিনে ৮টি পাকিস্তানি পতাকা উড়ানো হয়। সর্ব প্রথম পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে তা আগুনে পোড়ান মুক্তিযোদ্ধা এম.এন নবী লালু ও নাজমুল আরেফিন তারেক। সম্প্রতি ওই স্থানটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই বিজয় স্তম্ভ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন