দুই জঙ্গি নিহত, অভিযান চলছে: সেনাবাহিনী

  26-03-2017 09:14PM

পিএনএস: সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার শিববাড়ির আতিয়া মহলে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’-এ দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। ভেতরে আরো একাধিক জঙ্গি থাকতে পারে। তাদের কাছে ছোট আকারের আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক রয়েছে এবং তারা সবাই সুইসাইডাল ভেস্ট পরে প্রস্তুত হয়ে আছে।

আজ রবিবার বিকাল সাড়ে ৫ টার পর দ্বিতীয় দফায় সংবাদ সম্মলনে এসব তথ্য জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।

এসময় তিনি বলেন, ‘আমরা রকেট লাঞ্চার দিয়ে ছিদ্র করে তারপর সেখান দিয়ে টিয়ারসেল ছোড়ার পর তাদের জন্য ভেতরে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছিল। বিভিন্ন ফ্লোরে ছুটাছুটি করতে শুরু করেছিল। দুজন নিহত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত দেখতে পেয়েছি। একজনের দেহে সুইসাইড ভেস্ট লাগানো ছিল। দুজনকে দৌড়ানো অবস্থায় দেখে আমাদের কমান্ডোরা ফায়ার করেছে। তারা পড়ে যাওয়ার পর একজন সুইসাইড ভেস্ট বিস্ফোরণ ঘটায়। আমাদের কেউ আহত হননি।’

তিনি আরো বলেন, অভিযান সার্বক্ষণিক চলতে থাকবে। ভেতরে এক বা একাধিক জঙ্গি জীবিত রয়েছে। কতো জন পুরুষ বা কতো জন নারী, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তারা ওয়েল ট্রেইন্ড। তাদের কাছে গ্রেনেড, ছোট আকারের আগ্নেয়াস্ত্র ও এক্সপ্লোসিভ রয়েছে আছে। সুইসাইডাল ভেস্ট পরে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েই আছে জঙ্গিরা। এ কারণে এখানে অভিযান সময়সাপেক্ষ হবে। আর্মির গুলি লেগে ভেস্ট বিস্ফোরিত হয়েই ওই দুই জঙ্গি মারা গেছে।

ফখরুল আহসান বলেন, ‘অভিযান চলাকালে ভবনের ভেতরে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় ভেতরে। কিন্তু এই গ্রেনেড জঙ্গিরা কমান্ডোদের দিকে পাল্টা ছুড়ে মারে। ঘরের বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরক ফিট করে রেখেছে জঙ্গিরা। এতে বুঝা যায়, জঙ্গিরা জানে, কীভাবে নিজেদের আবাসস্থল দুর্গম করে রাখতে হয়। যেভাবে তারা বিস্ফোরক লাগিয়ে রেখেছে, এজন্য অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এজন্য সময় বেশি লেগেছে। তবে আমাদের প্রাথমিক যে টার্গেট ছিল, ভেতরে থাকা সাধারণ লোকদের সরিয়ে আনা, তাতে কমান্ডোরা সফল হয়েছে।’

আতিয়া মহল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে পাঠানপাড়া জামে মসজিদের সামনে ব্রিফিং করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।

তিনি জানান, তারা বাড়িটির অবস্থানগত কারণে অভিযান চালাতে কিছুটা বাধার মুখে পড়ছেন। বাড়িটির দেয়ালে দেয়ালে উচ্চক্ষমতার বিস্ফোরক বাধা আছে। অভিযান চলমান রয়েছে। কখন অভিযান শেষ হবে সেটিও বলা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, নিচতলার সিঁড়ির দিকে বেশি পরিমাণে বিস্ফোরক লাগিয়ে রাখে জঙ্গিরা। তাদের ধারণা ছিল, অভিযান নিচতলা থেকে শুরু হয়ে ওপরে যাবে। যে জন্য তারা নিচে বিস্ফোরক লাগায়। যখন কমান্ডোরা ভবনে ঢুকে বিষয়টি দেখতে পায়, তখন উল্টোভাবে অভিযান শুরু করেন কমান্ডোরা। পাঁচ তলা থেকে শুরু হয় অভিযান। একটা থেকে আরেকটা ফ্লোরে অভিযান হয়। এভাবে দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আটকা পড়াদের উদ্ধার করা হয়। নিচতলায় অভিযানের সময় সিঁড়ি ব্যবহার না করে জানালার গ্রিল কেটে নিচতলায় থাকা সাধারণ লোকদের উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, ভেতরে যে কয়েকজন আছেন, তাদের তারা জীবিত ধরতে চান। তিনি জানান, যে দুজন নিহত হয়েছেন, তাদের একজন আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মারা গেছেন। ভেতরে থাকা সবার গায়ে এই আত্মঘাতী বেল্ট বাঁধা রয়েছে।

এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, তাদের অভিযানের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বাড়ির ভেতরে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করে আনা। জঙ্গিরা ভেবেছিল কমান্ডোরা সামনে দিয়ে বাড়িতে ঢুকবেন। কিন্তু তারা ঢুকেছেন বাড়ির ছাদ দিয়ে। এ কারণে জঙ্গিরা বুঝতে পারেনি। এবং ৭৮ জনকে নিরাপদে বের করে আনতে পেরেছেন তারা।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন