চিরিরবন্দরে বিক্রি হচ্ছে না ‘চাই’

  24-08-2017 03:20PM

পিএনএস, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ভরা বর্ষাতেও মাছ ধরার গ্রামীণ উপকরণ ‘চাই’ বিক্রি কমে গেছে। চাঁই বাঁশের তৈরী যা স্থানীয় ভাষায় ডাইরকি বা ভুরঙ্গ নামে পরিচিতি। এক সময়ের জনপ্রিয় এই উপকরণটির ব্যবহার এখন অনেক কম। ভরা বর্ষাতে নদীনালা, খালবিল যখন থইথই, তখন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা মেলেনি ছাঁই দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য।

অথচ এক সময় এটিই ছিল এই উপজেলার মাছ ধরার প্রধান উপকরণ। চিরিরবন্দরের ভুষিরবন্দর, কারেন্টহাট, বিন্যাকুড়ির হাট, রাণীরবন্দর হাট ঘুরে দেখা গেছে, মাছ ধরার চাঁই বা ডাইরকি নিয়ে বসে আছেন বাঁশের তৈরির কারিগররা। বিক্রি কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা জানায়, এসব তৈরির আগের চেয়ে বেড়েছে খরচ। আগের মতো আর লাভ হয় না। নদী-নালাও জমিতে পর্যাপ্ত পানি হলেও নেই কোন মাছের দেখা।

এছাড়া দেশি মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই আগের মতো আর বিক্রি হচ্ছে না। উপজেলার নান্দেরাই গ্রামের কারিগর সূধীর হাড়ী জানান, চাঁই বা ডাইরকি তৈরিতে বাড়ির গৃহিনীসহ ছেলে-মেয়েরাও সহযোগিতা করে। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে এসব তৈরি করে থাকেন তারা। এসব তৈরিতে ছোট বড় প্রকারভেদ খরচ পড়ে ১৫০ টাকা থেকে ২শত টাতা। আর তা বিক্রি হয় দু’শত থেকে পাঁচ শত টাকায়। কিন্তু দিন দিন কমে যাচ্ছে এর বিক্রি। জমিতে আর আগের মত ক্ষেত নাই।

কৃষকেরা নিজনিজ জমর আইল বেঁধে পানির গতি নিয়ন্ত্রন করছে। তাছাড়া বেকার মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়ার এর প্রতি মানুষের আগ্রহ কম। তিনি আরও জানান, বাঁশের দাম বেশি হওয়ায় চাঁই বিক্রিতে আগের মত লাভ হয় না। প্রতি বছর বর্ষায় ভরা মৌসুমে বিভিন্ন হাট-বাজারে করে থাকি। প্রতিটি ছোট বড় চাঁই বিক্রি করে ৪০ থেকে ৮০ টাকা করে লাভ হয়। চাঁই বিক্রি করে আর সংসার চলেনা। বিন্যাকুড়ি হাটের বাসিন্দা বিমল চন্দ্র বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমরা ছোটবেলায় ডাইরকি দিয়ে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কেজি মাছ ধরতাম, তা বিক্রি করতাম ৩ থেকে ৪ শত টাকায়। যা দিয়ে বাড়ির খায়াও হত বিক্রি করে টাকাও পাওয়া যেতে। কিন্তু বর্তমানে খাল-বিল পানিতে ভরা থাকলেও দেখা মিলছেনা মাছের। তাই অন্য কাজ কওে চলতে হচ্ছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন