শেরপুরে বিএনপিতে ঐক্যের সুর র্দীঘ ২১বছরের দ্বন্দ্বের অবসান

  23-09-2017 05:58PM

পিএনএস, শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা : আর কোন ভেদাভেদ দেখতে চাই না। সবাই আমরা জিয়ার সৈনিক। তারই আদর্শে গড়া বিএনপি। সেই দলেরই আমরা একেকজন কর্মী। তাই অতীতের সব দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুলে গেছি। এখন থেকে আমাদের মাঝে আর কোন দ্বন্দ্ব নেই। সব দুঃখ কষ্ট ভুলে সবাই একত্রিত হয়েছি। দলের সিদ্ধান্তই হবে আমাদের সবার জন্য শিরধার্য।

গত শুক্রবার (২২সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বগুড়ার শেরপুরে বিএনপির বিবাদমান দু’গ্রুপের নেতাকর্মীদের নিয়ে আয়োজিত সমন্বয়সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের বক্তব্যে এসব কথাই উঠে আসে। আর এই সভার মাধ্যমে উপজেলা বিএনপিতে চলা দীর্ঘ ২১বছরের বিরোধ অবসান ঘটিয়ে ঐক্যের সুর বেজে উঠলো। সব ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে মিলিত হলেন তাঁরা। পৌরশহরের স্থানীয় বাসষ্ট্যান্ডস্থ দলীয় কার্যালয়ে ওই সভায় দু’গ্রুপের নেতাকর্মীদের একইমঞ্চে উপস্থিতি এক অভূতপূর্ব পরিবেশের সৃষ্টি করে। একইসঙ্গে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে তৈরী হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার।

পৌর বিএনপির সভাপতি বিএইচএম কামরুজ্জামান রাফুর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব জানে আলম খোকা, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলহাজ্ব কেএম মাহবুবার রহমান হারেজ, উপজেলা বিএনপির নেতা পিয়ার হোসেন পিয়ার, আব্দুল মান্নান, শফিকুল আলম তোতা, শহিদুল ইসলাম বাবলু, শাহ আলম পান্না, আরিফুর রহমান মিলন, হাসানুল মারুফ শিমুল, স্বাধীন কুমার কুণ্ডু, যুবদল নেতা শাহাবুল করিম, আবু রায়হান, আশেক মাহমুদ রোমান, স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা জাহিদুর রহমান ময়দান, শ্রমিকদল নেতা ইছাহাক আলী, ছাত্রদল নেতা আইয়ুব আলী মন্ডল, ইমন, ফরহাদ হোসেন, সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫সালে উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। এরপর ২০০১সালে বিএনপি ক্ষমতা আসলে এই গ্রুপিং প্রকাশ্যে রুপ নেয়। একপর্যায়ে ২০০৭সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ও জানে আলম খোকার বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় শেষ অবধি দল থেকে বহিস্কার হন জানে আলম খোকা। পরবর্তীতে জানে আলম খোকার বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। পাশাপাশি ২০০৯সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে সেই নির্বাচনে বিএনপি নেতা জানে আলম খোকা পরাজিত হন। ফলে দলীয় গ্রুপিং আরও বেড়ে যায়। এমনকি এই দু’গ্রুপের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব পিয়ার হোসেন পিয়ার বলেন, আমরা সব দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুলে গেছি। তাই আগামিদিনে দলের সব কর্মকাণ্ড আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করবো। আমাদের মাঝে আর কোন বিভেদ নেই। উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবলু বলেন, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামিতে পথ চলতে হবে।

ঐক্যবদ্ধভাবে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কেএম মাহবুবার রহমান হারেজ বলেন, এখন থেকে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মাঝে আর কোন দ্বন্দ্ব নেই। উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জানে আলম খোকা বলেন, বিএনপির মতো বড় দলে নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে দেশ ও দলের স্বার্থে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন