অসময়ের ভাঙ্গণে ভীটেবাড়ী হারাচ্ছেন পদ্মা পারের মানুষ

  17-11-2017 07:04PM

পিএনএস : মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের গোপিনাথপুর ছোট বাহাদুরপুর গ্রামের ডালিমা বেগম। চোখের সামনে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেল তার একমাত্র সহায়-সম্বল বসত বাড়ীঘর। তিনি এখন অসহায় তার থাকার জায়গা নেই। খোলা আকাশের নিচে তাকে থাকতে হবে। কী খাবে? কী করবে? এখন তিনি এই ভেবেই ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। ভিটে বাড়ীর পাশেই একটু জমি ছিল। যেখানে চাষাবাদ করে তার জীবিকা নির্বাহ করতেন। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ছিল তার। তা রাক্ষুসী পদ্মা এখন

তা খেয়ে ফেলেছে। তিনি বুক চাপড়ে এখন আহাজারি করছিলেন আর এই সব কথা বলছিলেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার গোপিনাথপুর, কাঞ্চনপুর রামকৃষ্ণপুর এলাকায় অসময়ে পদ্মায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ১৬ নভেম্বর বৃহষ্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পদ্মার ভাঙনের দৃশ্য সর্বত্র চোখে পড়ে।


পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে বাড়ী-ঘর, ফসলি জমিসহ বহু স্থাপনা। দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ। ভাঙন কবলিত ও আশপাশের এলাকার মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গত কয়েক দিনে পদ্মা নদীর ভাঙনে প্রায় ৮০টি পরিবার খোলা আকাশের নিচে ও রাস্তার পাশে আশ্রয় নেয়। অনেকেই সরকারি কোনো সাহায্য পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের অভিযোগ করে বলেন, গোপিনাথপুর উজানপাড়া, বাহাদুরপুর, ছোটবাহাদুর সহ আশপাশে সপ্তাহ খানেক আগে বেশ কয়েকটি ড্রেজার (বলগেট) দিয়ে ভাঙন কবলিত এলাকার কাছেই ড্রেজিং করলে পদ্মানদীর পানির স্রোত এসে পাড়ে লেগে ভাঙনের সুত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে প্রশাসনের নেতৃত্বে উক্ত ড্রেজারটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবুও ড্রেজিং বন্ধ না করাতে সেই ড্রেজারটিকে পরবর্তী দিনে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত ছয় জনকে গ্রেফতার করে প্রত্যেককে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান এবং আটককৃত ড্রেজারটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

হরিরামপুর উপজেলার গোপিনাথপুরের ছোট বাহাদুরপুর গ্রামে মরিয়ম বেগম জানান, পদ্মায় তার পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। তিনিসহ তার পরিবারের সবাই এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। তিনি এগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ ব্যপারে কাঞ্চনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মিয়া জানান,হঠাৎ করে পদ্মা নদীর এমন ভয়াবহতা কোনোদিন আমরা দেখিনি। আপাতত ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা পাইনি। তবে খুব দ্রুত সহয়তা পাবেন বলেও তিনি আশবাদ ব্যক্ত করেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন