প্রেমের বিয়ের পর করুণ পরিণতি?

  08-12-2018 01:45AM

পিএনএস ডেস্ক: চার বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন ৩০ বছর বয়সী রাজশাহী বাঘার প্রকৌশলী মেহেদী হাসান ওরফে মিলন ও ২৭ বছর বয়সী বৈশাখী।

কিন্তু ভালোবাসার সুখ বেশিদিন টেকেনি। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকার এক ভাড়া বাড়িতে বৈশাখীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে।

বৈশাখীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজের দাবি, তার মেয়ে বৈশাখীকে বুধবার কোনো একসময় খুন করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার কথা প্রচার করা হচ্ছে।

প্রকৌশলী মেহেদীর বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাজুবাঘা নতুনপাড়া গ্রামে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চার বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করা অবস্থায় বাঘা উপজেলার পানিকমড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজের একমাত্র মেয়ে বৈশাখীকে ভালোবেসে বিয়ে করেন একই উপজেলার বাজুবাঘা নতুনপাড়া গ্রামের সাজদার রহমানের ছেলে মেহেদী হসান ওরফে মিলন। বিয়ের ২০ দিন আগে ঢাকার এক প্রতিষ্ঠানে প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন মিলন।

মিলনের বাবা সাজদার রহমান অভিযোগ করে জানান, আমার ছেলের শ্বশুরের চেয়ে আমরা অনেক গরিব। এ কারণে বিয়ের পর থেকে আমার ছেলের বউ তার স্বামীসহ আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে আসছে। শুধু তাই নয়, পরপর দুবার আমার ছেলে তার বউকে নিয়ে ঢাকায় ঈদ করেছে। পরবর্তীতে আমার ছেলের পাঠানো টাকা দিয়ে গ্রামে একতলা একটি বাড়ির কাজ শুরু করি। এ কাজ এখনো শেষ হয়নি। তিনি জানান, এরই মধ্যে আমার স্ত্রীর নামে জমি বিক্রি করে সেখান থেকে কিছু টাকা আমার মেয়েকে দিই। আর বাকি টাকা ঘরের পেছনে ব্যয় করি। এ ঘটনায় আমি কেন মেয়ে জামাইকে টাকা দিলাম- তা নিয়ে আমার ছেলের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিরোধ চলতে থাকে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমার ছেলে অফিস থেকে বাসায় ফিরে তার স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখে আমাদের সবাইকে বিষয়টি জানায়।

তবে বৈশাখীর বাবা আব্দুল আজিজ দাবি করেন, তার মেয়েকে হত্যা করে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে লাশ ঝুলিয়েছেন তার জামাই মিলন। এর কারণ হিসেবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে ঢাকা থেকে মোবাইল ফোনে বৈশাখীর বড় ভাই সৌরভ স্থানীয় সাংবাদিকসহ তার পরিবারকে জানিয়েছেন বৈশাখীকে বৃহস্পতিবার মারা হয়নি। তাকে খুন করা হয়েছে আগের দিন বুধবার কোনো একসময়। এ কারণে তার পুরো শরীর ফুলে উঠেছে। পরে লাশের শরীরে সরিষার তেল মাখানো হয়েছে যাতে করে কোনো দাগ ধরা না পড়ে।

একই অভিযোগ করেন বৈশাখীর বাবা আব্দুল আজিজ। তিনি জানান, বুধবার সকাল ১১টার সময় আমার স্ত্রী তার মেয়ে বৈশাখীকে ফোন করেছিল। কিন্তু আমার মেয়ে সেই ফোন রিসিভ করেনি। এমনকি পরে ফোনও করেনি।

ঢাকার পল্লবী থানা ওসি নজরুল ইসলাম জানান, লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এই মুহূর্তে সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ঘটনাটি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। কারণ পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ পায়নি। মৃত্যুর পর লাশ তার স্বামী নিজেই নামিয়েছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন