শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

  12-08-2019 10:57AM

পিএনএস ডেস্ক :কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে শাস্তিপূর্ণভাবে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি ছিল এ ঈদগাহে ঈদুল আজহার ১৯২তম জামাত। এ জামাতকে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় অনুষ্ঠিত জামাতে ইমামতি করেন মার্কাস জামে মসজিদের খতিব মুফতি মো. হিফজুর রহমান। শোলাকিয়ার ঈদের জামাতের মূল ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ হজে থাকায় এবার মাওলানা হিফজুরকে জামাতের ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। তাছাড়া মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন, সেই সব শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করাসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য দোয়া করা হয়। এবং বঙ্গবন্ধুর পালিয়ে থানা খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে দেশকে তৌফিক দিতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়।

নামাজে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী ও পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হোসাইন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাসউদসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনীতিকসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ জামাতে অংশগ্রহণ করেন।

তবে এবার ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র পুরো শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। শোলাকিয়া মাঠকে ঘিরে চার স্তরের নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। দুই প্লাটুন বিজিবিসহ র‌্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যদের মোতায়েন করা হয় নিরাপত্তার দায়িত্বে। যারা মাঠে নামাজ পড়তে যান, তাদের সবাইকে বেশ কয়েকবার করে তল্লাশির মুখোমুখি হতে হয়।

মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির পর আর্চওয়ে দিয়ে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয় মুসল্লিদের। মাঠে স্থাপন করা বেশ কয়েকটি ওয়াচটাওয়ার থেকে পুরো মাঠ পর্যবক্ষেণ করা হয়। তাছাড়া দুটি ক্যামেরা ড্রোন দিয়ে ঈদের জামাত চলাকালীন মাঠের মুসল্লি ও আশপাশে নজরদারি করা হয়। সবমিলিয়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয় পুরো মাঠ এমনকি সারা শহর।

সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও এর ঘন্টাখানিক আগেই মুসুল্লিদের ঢল নামে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহে। এ সময় পুরো শহরের রাস্তাগুলোতে কয়েক ঘণ্টার জন্য সব সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে মুসল্লিদের পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যেতে হয়।

২০১৬ সলের ঈদুল ফিতরে রক্তাক্ত জঙ্গি হামলার পর থেকে শোলাকিয়ার ঈদের জামানে নিরাপত্তার দিকটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে পুরো আয়োজন সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষ। এবারও নিরাপত্তার দিকটি সামনে রেখে জামাতের আয়োজন করা হয।

মাঠের সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত আয়োজন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। এতে মুসল্লিদের কিছুটা সমস্যা হলেও নিরাপত্তার স্বার্থে তা করতে হয়েছে। মুসল্লিদের সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত কোনো ঝামেলা ছাড়াই ঈদের জামাত সম্পন্ন হওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন