টাঙ্গাইলে স্রোতে ডেবে গেছে সেতু, দুর্ভোগে ২০ গ্রামের মানুষ

  14-09-2019 03:59PM

পিএনএস ডেস্ক:টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তোরাপগঞ্জ-বঙ্গবন্ধুসেতু শেখ হাসিনা সড়কে কাকুয়া ইউনিয়নের রাঙ্গাচিড়া সেতুটি বন্যার পানির স্রোতে দেবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পড়েছে অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ।

দুর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসী ছোট ছোট যানবাহন পারাপারের জন্য সাময়িকভাবে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছে। এতেও স্থানীয়রা যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন।

টাঙ্গাইল জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ২২ লাখ টাকায় রাঙ্গাচিড়া সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের দায়িত্ব পায় ‘মোল্লা এণ্টারপ্রাইজ’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে দেখা যায়, দেবে যাওয়া সেতুর উপর বাঁশের একটি সাঁকো তৈরি করে তার মধ্যে কাঠের পাটাতন লাগানো হয়েছে। এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন চলাচল করছে।

কাকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস ছাত্তার আজাদ জানান, রাঙ্গাচিড়ায় নির্মিত সেতুটির নিচে কোনো আরসিসি পিলার ছিল না। স্বল্প ব্যয়ে নির্মিত এ সেতু বন্যার সময় পানির প্রবল স্রোতে গত জুলাই মাসে দেবে যায়।

টাঙ্গাইল থেকে চরপৌলী রুটের অটোরিকশার চালক রওশন আলী, বরকত আলী, হারাধন মিয়া সহ অনেকেই জানান, সেতুটি দেবে যাওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষের খুব অসুবিধা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। দ্রুত এটি পুননির্মাণের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

রাঙ্গাচিড়া গ্রামের রহমত আলী বলেন, অতি প্রয়োজনের তাগিদে বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এ সাঁকো দিয়ে অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল সহ হালকা যানবাহন হামেশা চলাচল করছে। এ সাঁকো দিয়ে চলাচল অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান ফারুক জানান, সেতুটির দরপত্রে পাইলিং করার কোনো নির্দেশনা ছিল না। বন্যার পানির প্রবল স্রোতে সেতুর নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে দেবে গেছে। এ সেতুর কারণে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

কাকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দেবে যাওয়া ওই সেতুর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কাঠের পাটাতন দিয়ে তিনি যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রকৌশলীকে (এলজিইডি) চিঠি দেয়া হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল গনি জানান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ কর্তৃক নির্মিত যেসব সেতু এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার তালিকা নেয়া হচ্ছে। অধিকতর গুরুত্বসম্পন্ন সড়কে যেসব সেতু ধসে গেছে সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, তোরাপগঞ্জ-বঙ্গবন্ধুসেতু সড়কটি জননেত্রী শেখ হাসিনা সড়ক হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত। যদিও সদর উপজেলার মাহমুদ নগর ইউনিয়নের গোলচত্তর থেকে বঙ্গবন্ধুসেতু পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ওই সড়কটি বর্তমানে নেদারল্যান্ডের সহায়তায় নতুন করে নির্মাণ করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। রাঙ্গাচিড়ায়ও এ বছরের মধ্যে চওড়া ও মজবুত করে সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন