পিএনএস, তানোর (রাজশাহী) সংবাদদাতা : ‘ বৈশাখী মেলা নেই। ঈদ মেলা নেই। করোনায় বসে বসে চলছে আমাদের দিন। এভাবে বসে থাকলে আর আয়-রোজগার না করলে পথে বসতে হবে। খুব কষ্টে আছি আমরা। ’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে কথাগুলো জানালো তানোর পৌর এলাকার হাবিবনগর গ্রামের মৃৎশিল্পী উজ্জ্বল পাল। শুধু উজ্জ্বল পাল নয় ওই এলাকার ২০টি মৃৎশিল্পী (পাল) পরিবার করোনার প্রভাবে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এমন চিত্র পুরো উপজেলার মৃৎশিল্পীদের মাঝে বিরাজ করছে।
বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাবে যখন জীবনযাত্রা থমকে গেছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। আর এর মধ্যে নান্দনিক মৃৎশিল্পীরা পড়েছেন বড্ড বিপাকে।
সরজমিন হাবিবনগর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন মাটির তৈরি সামগ্রী পুড়ানোর চুলা বন্ধ। দু’একটি পরিবার মাটির হাঁড়ি-পাতিলের কাজ করছেন।
এসময় মাটির কাজ করা মৃৎশিল্পী নন্দ রাণী পাল বলেন, ‘করোনার কারণে তারা কষ্টে আছেন। ১০কেজি চাল পেয়েছি। কিন্তু চালে কি হয়? পাড়া-গ্রাম ও হাট-বাজারে আগের মতো কেনাবেচা নেই। আবার পাইকাররাও হাঁড়ি-পাতিল কিনতে বাড়িতে আসছে না। ধার-দেনা করে কোন মতে চলছি।’
প্রবীণ মৃৎশিল্পী ধীরেন্দ্র নাথ পাল বলেন, ‘খুব কষ্টে আছি এই করোনর মধ্যে। সরকারি বা বেসরকারিভাবে কিছু ঋণ পেলে আমাদের চলতে সুবিধা হতো। কতদিন এই করোনার মধ্যে দিন কাটাতে হবে তা ঈশ্বই জানেন ?’
শুধু পৌর এলাকার হাবিবনগর নয়। উপজেলার শ্রীখন্ডা ও তানোর হিন্দুপাড়ায়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক মৃৎশিল্পী পরিবারে এখন আগের মতো কর্মময় নেই। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। অনেকেই আঁকড়ে ধরে কোন মতে বেঁচে আছেন। এদিকে উপজেলার প্রতীমা তৈরির (কারিগর) মৃৎশিল্পীরাও জানিয়েছেন করোনার মধ্যে তারে জীবন চলছে কষ্টের মধ্যে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, মৃৎশিল্পীদের মাঝে সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও তারা যেন স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণ পায় সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল
ভালো নেই মৃৎশিল্পীরা!
01-06-2020 03:45PM