বাঁশ ও কাঠ দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ

  13-01-2017 07:25AM

পিএনএস ডেস্ক: অবিশ্বাস্য হলেও সত্য রডের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে পাবনার সুজানগরের বিন্নাডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করে দুর্নীতির রেকর্ড সৃষ্টি করেছে দুইজন ঠিকাদার।
ভবনটি নির্মাণকালে বিষয়টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকাবাসীর চোখে না পড়লেও বর্তমানে পলেস্তরা খসে পড়ায় তা সকলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
জানা গেছে নতুন করে জাতীয়করণকৃত ওই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮০সালে। প্রতিষ্ঠালগ্নে টিনের ঘর দিয়ে বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হলেও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নে ১৯৯৩ ও ২০০১সালে দুই দফায় চার কক্ষ বিশিষ্ট ওই ভবনটি নির্মাণ করা হয়।
প্রথম দফায় ঠিকাদার সুলতান বিশ্বাস ও দ্বিতীয় দফায় ঠিকাদার রউফ সরদার দুই কক্ষ করে ওই ভবন নির্মাণ করেন। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন সংশ্লিষ্ট দুই ঠিকাদার শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সীমাহীন দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে তাদের সুবিধামত সময়ে বিদ্যালয়ের ওই ভবন নির্মাণ করেন।
সেকারণে ভবনটি নির্মাণকালে কি জাতীয় নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে তা আমরা দেখতে পারিনি। তবে সম্পতি ভবনটির বিভিন্ন জায়গা থেকে ইট-শুরকি ও পলেস্তরা খুলে গেলে রডের পাশাপাশি বাঁশের টেপন ও কাঠের বাতা চোখে পড়ে

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, বিদ্যালয় ভবনের এমন শোচনীয় অবস্থা যে,যেকোন মুহূর্তে ধসে পড়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হতাহত পারে। কিন্তু তারপরও বিকল্প কোন ভাবন না থাকায় দিনের পর দিন ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনেই চলছে কমলমতী শিশুদের পাঠদান।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তফা শেখ বলেন, বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা বিভাগ এবং উপজেলা প্রকৌশল বিভাগকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তবে আমিন উদ্দিন নামে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মৌখিকভাবে আমাদের জানালেও লিখিতভাবে পাঠদান বন্ধ রাখতে বলেননি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দা নার্গিস আক্তার বলেন সহকারী শিক্ষা অফিসার বিলাল হোসেনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছি। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে কিছু জানায়নি। তবে আমি এরই মধ্যে বিষয়টি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পাশাপাশি ওই ভবনে পাঠদান না করতে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছি।
উপজেলা প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম এ ব্যাপারে প্রথমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও পরে বলেন, ওই ভবন আমার কার্যকালে নয়, অনেক আগে নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া বাঁশ কাঠ দিয়ে ওই ভবন নির্মাণের বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।
তবে এখন জেনেছি চেষ্টা করবো খোঁজ খবর নিয়ে শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাখাওয়াত হোসেন বলেন ঘটনা সত্য হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন