তিন মিনিটেই খুন আরিফা! (সিসি টিভি ফুটেজ)

  17-03-2017 05:50PM

পিএনএস ডেস্ক: যমুনা ব্যাংকের নারী কর্মকর্তা আরিফুন্নেছা আরিফা খুন হওয়ার আগে তার সাবেক স্বামী রবিনের সঙ্গে বাড়িতে প্রবেশের দৃশ্য দেখা গেছে ওই বাড়িতে থাকা সিসি ক্যামেরায়। খুন হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সিসি ক্যামেরার সেই দৃশ্য সংগ্রহ করেছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সকাল ৮টা ৪৪ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড। এসময় আরিফাকে ধূসর রংয়ের শর্ট জামা ও কালো ঢোলা পাজামা পরে বাম কানে মোবাইল দিয়ে কথা বলতে বলতে গেটের দিকে যেতে দেখা যায়। এর তিন মিনিট পর ৮টা ৪৭ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের দিকে দুজনকে পকেট গেট দিয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এসময় দেখা যায়, রবিন (প্যান্ট শাট ইন করা এবং জুতা পরিহিত) বাম হাত দিয়ে একটি লাল রংয়ের প্লাস্টিকের র‌্যাক বুকে চেপে এবং ডান হাতে একটি সাদা ছোট বস্তা নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। তার পেছনে আরিফা তার দুই হাতে দুটি হ্যান্ড ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করছেন।

এরপর আর কোনো সাড়াশব্দ নেই। সকাল ৮টা ৫১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের দিকে রবিনকে খালি হাতে দৌড় দিতে দেখা যায়। মূলগেট খোলা না থাকলেও পকেট গেট দিয়ে রবিনকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। রবিন পালানোর পর আশেপাশের লোকজন দৌড়ে গিয়ে দেখেন আরিফা গলা কাটা অবস্থায় নীচ তলায় সিড়ির গোড়ায় দরজার সামনে পড়ে আছে। তখন একটি রিকশা ডেকে আরিফাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে সেন্ট্রাল রোড ধরে হাতিরপুলের দিকে যেতে কিছুদূর এগুতেই হাতের বায়ে ওয়েস্টিন স্ট্রিট রোড। সেই রোড ধরে এগুলেই হাতের বায়ে ১৩/এ বাড়ির গেট। গেট দিয়ে ঢুকতেই বেশ কয়েকটি ভবন। সবশেষের দিকে একেবারেই পশ্চিম পার্শ্বে একটি ভবন আছে। সেই ভবনের নীচ তলায় একটি রুমে সাবলেট থাকতেন আরিফা। এই রুমে প্রবেশ দরজার সামনে উপরে উঠার সিঁড়ির গোড়ায় রক্তের স্রোতের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। একেবারেই কালো হয়ে শুকিয়ে গেছে রক্ত। সেখান থেকে রক্ত গড়িয়ে গেছে অনেকটা জায়গা জুড়ে।

তার পাশের ফ্লাটের ভাড়াটিয়া মনিরুল ইসলাম জানান, গত আগস্ট মাসে আরিফা এখানে আসে। তার সঙ্গে বৃদ্ধ মাও থাকতেন। যতদূর জেনেছি তিনি যমুনা ব্যাংকে চাকরি করতেন। কখন যান আর কখন আসেন কেউ টেরই পেত না। আজ সকালে একটি ছেলে আসে। কখন ছুরি মেরে চলে গেছে তাও কেউ দেখেনি। সকাল বেলা অনেকেই অফিস যাওয়ার জন্য বের হলেই ঘটনা সবাই জানতে পারে।

আরিফা যে বাসায় সাবলেট থাকতেন। সেই বাসার ভাড়াটিয়ার স্ত্রী বলেন, ১০/১২ দিন হবে আরিফার মা অসুস্থ হয়ে গ্রামের বাসায় গেছেন। আরিফা এখানে একাই থাকত। প্রতি বৃহস্পতিবার আশকোনায় ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার কথা শুনেছি। কোনো ছেলেই এই বাসায় কোনো দিন আসেনি।

দাঁরোয়ান সলেমান বলেন, আরিফা গেট দিয়ে বের হয়ে সেন্ট্রাল রোড সংলগ্ন ওয়েস্টিন স্ট্রিট রোডের মাথা থেকে ছেলেটিকে সঙ্গে করে নিয়ে এসে ভেতরে প্রবেশ করেন। তিনি সঙ্গে নিয়ে না আসলে তো ওই ছেলে ঢুকতে পারতেন না।

কলাবাগান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াসীর আরাফাত খান বলেন, সমঝোতা না হলে কেন একজন ডিভোর্স দেওয়া ছেলেকে মাল-সামানা নিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে আসবেন। একদিকে নিরাপত্তা চেয়ে জিডি আরেকদিকে ডিভোর্সের পরও সম্পর্ক ঠিক রাখা, কেমন হয় না বিষয়টা। যাইহোক এরপরেও এটি যেহেতু খুনের ঘটনা। সুতরাং আসামিকে গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ। তদন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানান ওসি।



পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন