মাকে বেঁধে রেখে মেয়েকে গণধর্ষণ

  20-08-2017 09:34PM

পিএনএস ডেস্ক : নীলফামারীর ডিমলায় অন্তঃসত্তা শেফালীকে গাছে বেধে মধ্যযুগীয় নির্যাতনের রেশ কাটতে না কাটতে এবার মাকে বাড়ীর উঠানে বেঁধে রেখে ৩ সন্তানের জননীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

রোববার ভোর রাতে ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নর দুর্গম চর পশ্চিম ছাতুনামায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মাকে বাড়ীর উঠানে বেধে রেখে ৩ সন্তানের জননীকে তুলে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বখাটেদের বিরুদ্ধে। সকালে পশ্চিম ছাতুনাম গ্রামের মেয়েটির বাড়ী থেকে ১ কিলোমিটার দুরে মুমুর্ষ হাত-পা বাধা অবস্থায় ফেন্সি বেগম (২৭) দেখতে পায় এলাকাবাসী। সে ওই গ্রামের কলিম উদ্দিনের কন্যা ও একই এলাকার রশিদুল ইসলামমের স্ত্রী।

নির্যাতিতর পরিবার সুত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন ভোরে ফেন্সি বেগমকে বাড়ী থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মা ফাতেমা বেগম (৬০)কে বাড়ীর উঠানে মুখ কাপর ও হাত দুটো রশি দিয়ে পাশ্ববর্তী খুটিতে বেধে রাখে। মাকে বেধে রেখে বাড়ীর ১কিলোমিটার পূর্ব দিকে ফেন্সিকে নির্জন এলাকায় নিয়ে স্থানীয় বখাটেরা জোর পূর্বক ধর্ষন করেন। দুপুরে পুলিশ হাত পা বাধা অবস্থায় ফেন্সি ও তার মা ফাতেমা বেগমকে উদ্ধার করে।

ডিমলা থানার সিনিয়র সাব ইন্সেপেক্টর (এসআই) শাহাবুদ্দিন ঘটনাস্থল থেকে ফেন্সি ও তার মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির করান। বিকাল ৩টায় মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য পুলিশ পাহাড়ায় নীলফামারী আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ডিমলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফেন্সি বেগম এই প্রতিবেদক জানায়, তার মুখ বেধে ৩/৪ জন গনধর্ষন করেছে তাকে। কারা তাকে ধর্ষন করেছে তাদের নাম সে বলতে পারেনি।

ফেন্সির মা ফাতেমা বেগম বলেন, আমার জামাতা রশিদুল ইসলাম বাড়ীতে না থাকায় আমি,মেয়ে ফেন্সিসহ আমার নাতনী রেখা (৭), পারভীন (৩) ও নাতি সবুজ (৫) সহ জমাই বাড়ীতে বসবাস করতাম। রোববার ভোরে রাতে পাশ্ববতী মিস্টার, রহিম, দেলওয়ার, চেতনাসহ ১০/১২জন আমার মেয়ের রুমে প্রবেশ করে তাকে হাত পা বেধে কাধে করে নিয়ে যায়। এ সময় তারা আমার মুখে বেধে বাইরে উঠানে রশি দিয়ে বেধে রাখে। আমার নাতনী রেখা আক্তারের আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন।

ডিমলা থানার এসআই শাহাবুদ্দিন বলেন, ফেন্সি ও তার মা ফাতেমা বেগমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফেন্সির পিতা কলিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, পাশ্ববর্তী আবুল হোসেন, মোকলেছার রহমান, চাটি মামুদের সাথে জমি নিয়ে দ্বন্দ চলে আসছিল। আমার পরিবারের ক্ষতি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে আমার স্ত্রীকে বেধে রেখে ফেন্সি তুলে নিয়ে নির্জন স্থানে ধর্ষণ করে।

ডিমলা হাসপাতালে জরুরী বিভাগে কর্মরত ডাক্তার কৃষ্ণা রানী সেন বলেন, দুপুর ২টায় ফেন্সি ও তার মা ফাতেমা বেগমকে ডিমলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মেয়েটি অভিযোগ করেন তাকে ধর্ষণ করা হয়। মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বিকাল ৩টায় নীলফামারী আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের দুর্গম পশ্চিম ছাতুনামা চরে মাকে বেধে রেখে মেয়ে ফেন্সি বেগমকে তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক।

ডিমলা থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঘটনার স্বীকার মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য নীলফামারীতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। এ রিপোট লেখা পর্যন্ত থানার মামলা দায়ের হয়নি, তবে পরিবারকে থানায় মামলা দেবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন