ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে কিলিং মিশনে উত্তরার কিশোর গ্যাং

  25-03-2018 09:24AM

পিএনএস ডেস্ক:প্রায় বছরখানেক আগে ছোটখাটে রেষারেষির জেরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রাজধানীর উত্তরার কিশোর গ্যাং তুমুল আলোচনা তৈরি করে। কিশোর গ্যাংয়ের অন্তর্দ্বন্দ্বে খুন হয় স্কুলছাত্র আদনান কবির।উত্তরার সেই কিশোর গ্যাং ফের সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে নাবিল মোবারক (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের চার নম্বর সড়কের ৫৪ নম্বর বাড়ির ছাদে গত মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একদিন পর নাবিল মোবারকের বাবা মকছুদ আলী উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ৩৭। তবে গ্রেফতার হয়নি হামলাকারী কিশোর।

আহত ওই কিশোরের বাবা এজাহারে উল্লেখ করেছেন, মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে নাবিলের মায়ের মোবাইলে জীবন ঢালী নামে একছেলে ফোন দিয়ে নাবিলকে খোঁজে। সে নিজেকে নাবিলের বন্ধু পরিচয় দেয়। এরপর নাবিল বাসা থেকে বের হয়ে যায়। রাত ৯ টার দিকে নাবিলের একজন শিক্ষক ফোন করে জানান, নাবিল মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। এরপর সেখানে গিয়ে নাবিলকে তার মা ও ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাবিল এখন গলা, পেট, হাত ও পিঠে অসংখ্য ছুরিকাঘাতের ক্ষত নিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাবিল এখন চিকিৎসা নিচ্ছে ঢামেক হাসপাতালে।

হামলাকারী কিশোর জীবন ঢালী (১৭) উত্তরার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দির নাগেরকান্দি গ্রামে। তার বাবার নাম শাহিন মিয়া। ঘটনার দিন রাত ৮ টা ৩২ মিনিটে জীবন তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেয়। সেখানে সে ইংরেজি বর্ণে লেখে ‘সব শালারে খুন কইরা লামু’। এরপরই নাবিলকে তার বাসার ছাদে নিয়ে হত্যার হামলা চালায়।

জীবন কী কারণে ছুড়িকাঘাত করলো তা বলতে পারছে না নাবিল। ঘটনার পর থেকে জীবন পলাতক রয়েছে। পুলিশ একাধিকবার তার বাসাসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়েও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের ধারণা, জীবন মাদকাসক্ত।

প্রসঙ্গত: গত বছরের ৬ জানুয়ারি প্রতিপক্ষ গ্রুপের সদস্যদের হামলায় মারা যায় আদনান কবির নামে একটি কিশোর। ওই হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া কিশোররা স্বীকারোক্তি দেয়—আদনান হত্যাকাণ্ডের আগে উত্তরার গ্যাংগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ জানুয়ারি ডিস্কো বয়েজ গ্রুপ ও বিগবস গ্রুপের সদস্যরা নাইন স্টার গ্রুপের গ্যাং লিডার রাজুকে মারধর করে। দুদিন পর আজমপুর ফুটওভার ব্রিজের নিচে নাইনস্টার গ্রুপের সদস্যরা বিগবস গ্রুপের গ্যাং লিডার ছোটনকে আক্রমণ করে। ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাড়ির সামনে ডিস্কো বয়েজ গ্রুপ ও বিগবস গ্রুপের সদস্যরা নাইন স্টারের আদনান কবিরকে ধারালো অস্ত্র ও হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করলে তার মৃত্যু হয়।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন