`আদর্শবাদী ইসলামী রাষ্ট্রের রোল মডেল খোমেইনী'

  02-06-2018 02:10AM

পিএনএস ডেস্ক: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেইনী বিশ্ববাসীর নিকট আদর্শবাদী ইসলামি রাষ্ট্রের রোল মডেল উপস্থাপন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

শুক্রবার বিকেলে ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কনভেনশন হলে ইমাম খোমেইনীর ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।

বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী যখন চিন্তার নৈরাজ্য চলছিল এবং সমাজতান্ত্রিক বস্তুবাদ ও পুঁজিবাদী বস্তুবাদ যখন মানুষকে মুক্তি দেয়ার বদলে শোষণ করছিল তখনই বিশ্বের সকল মানুষের সামনে আদর্শবাদী ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার এক যুগান্তকারী মডেল উপস্থাপন করেছিলেন ইমাম খোমেইনী।

বর্তমানে ইসলামের নামে এক ধরনের ব্যবসা চলছে, শুধু নামসর্বস্ব ইসলামে সবকিছু সয়লাব হয়ে যাচ্ছে এবং হারিয়ে যাচ্ছে আসল ইসলাম- এমন মন্তব্য করে বক্তারা সবাইকে সত্যিকারের ইসলামি মূল্যবোধ ও আদর্শ অনুসরণ করার আহবান জানান।

ইমাম খোমেইনী ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সব সময় অত্যন্ত সজাগ ছিলেন এবং বিশ্ববাসীকে সজাগ করেছেন।

ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে “মুসলিম উম্মাহর পুনর্জাগরণে ইমাম খোমেইনীর (র.) চিন্তা-দর্শনের প্রভাব“- শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরিটাস ড. এম শমসের আলী। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও গ্রীনওয়াচ ঢাকার সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজী দেহনাভী, ইসলামী চিন্তাবিদ মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ রাশেদ আলম ভূঁইয়া ও ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সিলর সাইয়্যেদ মূসা হোসাইনী।

বক্তারা বলেন, ইমাম খোমেইনী (র.) মহান আল্লাহর ওপর নির্ভর করে ইরানের জনগণকে একতাবদ্ধ করে ইরানে ইসলামি বিপ্লব সাধন করেন। এই বিপ্লবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো স্বাধীনতা, মুক্তি ও ইসলাম ধর্মের ওপর ভিত্তি করে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করা। যার ফলে ইরানে আড়াই হাজার বছরের রাজতন্ত্রের পতন এবং ইরানি জনগণের ওপর বিদেশী ও সাম্রাজ্যবাদীদের কর্তৃত্বের অবসান হয়।

ইসলামি বিপ্লবের শত্রুরা এই বিপ্লব ও ইমাম খোমেইনীর দর্শনকে ধ্বংস করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করলেও তাঁর চিন্তা-দর্শন এখনও জীবন্ত ও প্রগতিশীল দর্শন হিসেবেই বিস্তৃত হচ্ছে- এমন মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ইসলামি দেশের জনগণের মধ্যে যে জাগরণ, বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন ও রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে তা যে ইসলামি উম্মাহর মধ্যে ইমাম খোমেইনীর চিন্তা-দর্শনের প্রভাব থেকেই হয়েছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

বক্তারা সবাইকে সতর্ক করে বলেন, সত্যিকারের ইসলামি জাগরণ থেকে মুসলমানদের বিচ্যুত করার পাশাপাশি তাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার উদ্দেশ্যে ইসলামি জাগরণের নামে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী ও ইসলামের শত্রুদের পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কিছু উগ্র ও বিকৃত চিন্তাধারাসম্পন্ন গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে।

মুসলিম উম্মাহর বিভেদকে বিশ্ব মুসলিমদের জন্য এক বড় বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ইমাম খোমেইনীই সবার আগে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনকে বিশ্বের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিমা ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় মুসলমানদের একতাবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলেও সতর্ক করে দেন বক্তারা।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন