সিএএ আইনের চ্যালেঞ্জ শুনানি আজ ভারতের সুপ্রিম কোর্টে

  19-03-2024 12:32PM




পিএনএস ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এই আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে ২৩৭টি আবেদন জমা পড়েছে। সেসব আবেদন নিয়ে আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হওয়ার কথা। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই শুনানি করবে। আবেদনকারীদের মধ্যে অন্যতম কেরালাভিত্তিক একটি রাজনৈতিক দল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ (আইইউএমএল), ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (ডিওয়াইএফআই), কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ, তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্র এবং এআইএমআইএমের প্রধান আসাদুুদ্দিন ওয়েইসি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।

সিএএ আইন বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় সরকার যেদিন ঘোষণা দেয়, তার পরদিনই দুটি সংগঠন এই আইনকে স্থগিত করার দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। তারা সিএএ’কে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক বলে অভিহিত করে।

২০১৯ সালে পার্লামেন্ট যখন নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাস করে, তখন এর বিরুদ্ধে বহু আবেদন জমা পড়ে। তখন এই আইন ঘোষণা বা নোটিফাই করা হয়নি বলে এর বাস্তবায়ন স্থগিত করার রায় দেয়নি আদালত। শুক্রবার সিনিয়র আইনজীবি কপিল সিবাল আদালতকে বলেছেন, বিধি না থাকায় তখন আইনটি স্থগিত করার প্রশ্নই আসেনি।

তখন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, এই আইনটি নির্বাচনের আগে নোটিফাই করা হয়েছে। এটাই অপ্রাসঙ্গিক।

এই আইনের অধীনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের যেসব অমুসলিম ধর্মীয় নির্যাতনের অভিযোগে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন, তারা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন। ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বর বা তার আগে এ তিনটি দেশের যেসব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টান ভারতে গিয়েছেন তারাই সিএএর অধীনে নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হবেন।

কিন্তু আইনটি পার্লামেন্ট পাস করেছে চার বছর আগে। তা এখন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যকর করার কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী দল। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, এই উদ্যোগ নির্বাচনকে মেরুকরণের সুস্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ও আসামের নির্বাচনকে মেরুকরণ করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সিএএর বৈধতা নিয়ে তার সন্দেহ আছে। এর মাধ্যমে নাগরিকত্বের অধিকারকে ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। মমতা বলেন, বিজেপি নেতারা বলছেন- সিএএ আপনাদেরকে অধিকার দিচ্ছে। কিন্তু যে মুহূর্তে আপনি এই নাগরিকত্বে জন্য আবেদন করছেন, তখন কিন্তু আপনি অবৈধ অভিবাসী হয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে আপনার অধিকার হারাবেন। তারপর আপনাকে নেয়া হবে বন্দিশিবিরে। আবেদন করার আগে দয়া করে ভাবুন।

তবে বিরোধীদের এসব অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তারা বলেছে, সিএএ কোনো অসাংবিধানিক বিষয় নয়। বিরোধীরা এটা নিয়ে মিথ্যার রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

আইনটি বাস্তবায়নের সময় সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের মেনিফেস্টোতে বিজেপি এটা পরিষ্কার করেছে যে, সিএএ আনবে বিজেপি। (বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের) শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেবে। বিজেপির পরিষ্কার এজেন্ডা আছে এবং প্রতিশ্রুতির অনুযায়ী, নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল ২০১৯ সালে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ পাস করেছে। কিন্তু তা বাস্তবায়নের বিলম্ব হয়েছে করোনা মহামারির কারণে। তিনি আরও বলেন, দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভীত হওয়া উচিত নয়। সিএএতে এমন কোনো বিধান নেই, যা কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন