নগর পরিচ্ছন্নতায় কাজে আসেনি ডিসিসির ওয়েস্টবিন প্রকল্প

  28-10-2016 12:30PM



পিএনএস: অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ঢাকা নগরীর অন্যতম অভিশাপ যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। নিত্যদিনের এ সমস্যা সমাধানে সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে কঠিন ও শুষ্ক বর্জ্য ফেলার জন্য নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি রাস্তার পাশে প্রায় ১০ হাজার ওয়েস্টবিন বসিয়েছে। শুরুতে এগুলো সবার নজর কাড়লেও তা ব্যবহারে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না নগরবাসীর।

সরেজমিন দেখা গেছে, সচেতন কিছু সংখ্যক মানুষ এ ওয়েস্টবিনগুলো ব্যবহার করলেও অনেকে আগের মতোই ময়লা ফেলছেন যেখানে সেখানে। এ ছাড়া এরই মধ্যে ওয়েস্টবিন প্রকল্প ব্যবস্থাপনায়ও দেখা গেছে অনিয়ম। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় দিনের পর দিন জমে থাকা আবর্জনা একদিকে যেমন দুর্গন্ধ ছড়ায়, তেমনি উপচেপড়া বিনের বাইরে ময়লা ফেলতে বাধ্য হয় পথচারীরা। অধিকাংশ ওয়েস্টবিনই কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। আবার কিছু ওয়েস্টবিনের ঢাকনা চুরি হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ওয়েস্টবিনের স্ট্যান্ড (ধারক) থাকলেও গোটা ওয়েস্টবিনই লাপাত্তা।

রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যান হয়ে বিজয় সরণী রাস্তার দুই পাশের, মোহাম্মদপুর হয়ে আসাদগেট পর্যন্ত, জাহাঙ্গীরগেট হয়ে মহাখালী রেলগেট পর্যন্ত প্রায় সবগুলো ডাস্টবিনেরই ঢাকনা চুরি হয়ে গেছে। এসব এলাকায় বেশ কয়েকটি ওয়েস্টবিনের শুধু স্ট্যান্ড (ধারক) আছে, ওয়েস্টবিন লাপাত্তা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ওয়েস্টবিন নষ্ট ও ঢাকনা চুরির বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। ছিন্নমূল টোকাইরাই এগুলো করছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। প্রথমে এরা ঢাকনাকে ভেঙে রাখে, পরে সেটা খুলে নিয়ে যায়। আমরা এগুলো প্রতিরোধের চেষ্টা করছি। তা ছাড়া যে সব ওয়েস্টবিন চুরি হয়ে গেছে বা নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো আবার বসানো হবে। আর এগুলো ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সহযোগিতা চেয়েছি। নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়েই জনসচেতনতা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আশা করছি এগুলো ব্যবহারে আমরা সফল হব।

এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম এ রাজ্জাক বলেন, জনসমাগম এলাকায় প্রতি দেড়শ’ মিটার পরপর একটি করে এবং যে সব এলাকায় জনসমাগম কম সেখানে প্রতি তিনশ’ মিটার পরপর একটি করে ওয়েস্টবিন বসানো হয়েছে। এসব ওয়েস্টবিনে মূলত শুকনা ও কঠিন বর্জ্য ফেলার জন্য বসানো হয়েছে। তবে একেবারে এগুলো ব্যবহার হচ্ছে না তা নয়। সচেতন নাগরিকরা এটি ব্যবহার করছে বলেই কিছু কিছু এলাকায় এগুলো দ্রুত ভরে উপচেও পড়ছে। আসলে বিষয়টা নগরবাসীর সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। এসব ওয়েস্টবিন ব্যবহারের জন্য জনসচেতনতামূলক প্রচারণাও হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় রাস্তার পাশে দৃষ্টিনন্দন এসব ওয়েস্টবিন চোখে পড়ার মতো করেই বসানো হয়েছে, যাতে নগরবাসী নিজ উদ্যোগে এগুলো ব্যবহার করে। তার পরও যদি এগুলো ব্যবহার না হয় তাহলে তো জোর করে ব্যবহার করানো যাবে না। আমার এ জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি। আর যেসব ওয়েস্টবিনের ঢাকনা চুরি হয়ে গেছে বা ওয়েস্টবিনটিই নষ্ট হয়ে গেছে এগুলো আবারো বসানো হচ্ছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন